কালো ধোঁয়ায় বছরে মারা যায় ৮৫ হাজার মানুষ

পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আর কালক্ষেপণ নয়

দেশে অসংক্রামক রোগের কারণে অকালমৃত্যুর ১০ শতাংশ অর্থাৎ বছরে প্রায় ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে প্রত্যক্ষভাবে কালো ধোঁয়ায় সৃষ্ট শ্বাসকষ্টজনিত রোগে। বাতাসে কালো ধোঁয়ার উপস্থিতি এবং এর প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণার বরাত দিয়ে বণিক বার্তায় প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) .-এর বার্ষিক সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে  প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ১৫ মাইক্রোগ্রাম। তবে ২৪ ঘণ্টার জন্য ৬৫ মাইক্রোগ্রাম থাকতে পারে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মাত্রা আরো কম হওয়া দরকার। কিন্তু বাংলাদেশে এটির উপস্থিতি আরো বেশি। ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, কখনো কখনো তা ৩০০ মাইক্রোগ্রাম ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের বেশির ভাগ সময় এর মাত্রা ছিল ২০০ মাইক্রোগ্রামের ওপর। এর কারণে বায়ুদূষণজনিত শ্বাসকষ্ট রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রত্যাশিত গড় আয়ু থেকে ২২ মাসের বেশি কমে যাচ্ছে।

অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠা, যেখানে সেখানে ইটভাটা স্থাপন, শহরের মধ্যে ভবন বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ বায়ুুদূষণের বড় কারণ। সেই সঙ্গে শহরে প্রচুর ধুলায় বায়ুুদূষণ হচ্ছে। ট্রাফিক জ্যামের কারণে গাড়িগুলো রাস্তায় অতিরিক্ত সময় ধরে চলছে, সেগুলো অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ করছে, এসবও বায়ুুদূষণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বায়ুুদূষণের কারণে পরিবেশ অতিরিক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে, সেই গরম ঠাণ্ডা করার জন্য মানুষ অতিরিক্ত এসি ব্যবহার করছে। তাতে বায়ুুদূষণ আরো বাড়ছে। অবকাঠামো নির্মাণকাজে অতি প্রয়োজনীয় ইটের ব্যবহার মাথায় রেখে দেশের ইটভাটাগুলোকে পরিবেশবান্ধব করে তোলা বিশেষ জরুরি। ব্যাপারে সরকারের দায়িত্বশীল মহলের কঠোর নজরদারি অত্যাবশ্যক।

পরিকল্পনার অভাবে বাংলাদেশে বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে বায়ুদূষণ সহনীয় মাত্রায় আনা সম্ভব। বাতাসে ক্ষতিকর বস্তুকণা থাকবে, তবে তা সহনীয় মাত্রায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। নগরের আশপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটা বন্ধ এবং সেই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব ইটভাটা নির্মাণে জোর দিতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করাও জরুরি। সকাল-দুপুর-বিকালে অন্তত তিন দফা নির্মাণাধীন রাস্তাঘাটে পানি ছিটানো প্রয়োজন। প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তায় বালি, মাটিসহ নানা ধরনের সামগ্রী পরিবহনের সময় পণ্য ঢেকে স্থানান্তর করা দরকার। ব্যক্তি বা পারিবারিক পর্যায়ে বায়ুদূষণ প্রতিরোধে বাড়ি, কারখানা, গাড়ি থেকে ধোঁয়া নিঃসরণ কম করার চেষ্টা করতে হবে। আবর্জনা বা জঞ্জাল ডাস্টবিনে ফেলতে হবে, পোড়ানো যাবে না। থুতু ফেলার জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে। সবাইকে বায়ুদূষণসংক্রান্ত সব আইন মেনে চলতে হবে।

বায়ুদূষণ আমাদের জীবনে এমন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে যে খুব দ্রুত যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা না করা যায়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি অসুস্থ প্রজন্ম হিসেবে বেড়ে উঠবে। কাজে সফল না হলে ২০৫০ সালে গোটা বিশ্বে বায়ুদূষণের কারণে ৬০ লাখেরও বেশি মানুষের অকালমৃত্যু ঘটবে। শুধু এশিয়ায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। বায়ুদূষণ যতই বাড়বে ততই আমাদের পক্ষে বিশুদ্ধ বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। বায়ুদূষণ ভবিষ্যৎ মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দাঁড়াবে। বায়ুদূষণ থেকে

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন