চলে গেলেন ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু

বণিক বার্তা অনলাইন

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু। আজ  মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।  রওশন আরা বাচ্চু ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন সংগ্রামী সৈনিক ছিলেন। ২১শে ফেব্রুয়ারিতে যে সমস্ত ছাত্র নেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গতে চেয়েছিলেন তিনি তাদের অন্যতম।

নিহত রওশনের মৃত্যুর খবর তার মেয়ে তাহমিদা বাচ্চু গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মা বেশ কদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রওশন আরা বাচ্চুর মরদেহ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বাংলা একাডেমিতে  নেওয়া হয়। পরে তার কফিন নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর পশ্চিম মণিপুরের বাসায়। আসরের পর জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি কুলাউড়ায়। সেখানে রাতেই তাকে দাফন করা হবে।

মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া থানার উছলাপাড়া গ্রামে ১৯৩২ সালের ১৭ই ডিসেম্বর রওশন আরা বাচ্চুর জন্ম। পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্স ও পরে ইতিহাসে এমএ পাস করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোতেই রওশন আরা গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টে যোগ দিয়ে জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্সের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

ভাষা আন্দোলনের সময় তার নেতৃত্বেই ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমাবেশস্থলে সমবেত হয়। সমাবেশস্থলের বাইরে তখন পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েছে। আরও কয়েকজন ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রওশন আরা বাচ্চু সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন এবং দলের অন্যদের নিয়ে বেরিয়ে যান। পুলিশ এলোপাথাড়ি লাঠিপেটা শুরু করলে আহত হন দুজন, তাদের একজন রওশন আরা।

ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটল অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল, নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘ দিন। সবশেষে ২০০০ সালে বিএড কলেজের অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান সংগ্রামী এই নারী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন