ভিড়ের মধ্যেই একজন ‘আইএস টুপি’ দিয়েছে, আদালতকে জঙ্গি রিগ্যান

আলোচিত হোলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মামলার রায় ঘোষণার দিন ভিড়ের মধ্যেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান (২২) আইএস মনোগ্রাম সম্বলিত টুপি ভিড়ের মধ্যে পেয়েছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাজধানীর কল্যাণপুরের ‘জাহাজ বিল্ডিং’ জঙ্গি আস্তানার মামলায় শুনানির সময় এ কথা বলেছেন।

ওই মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে রিগ্যানও একজন। ওই মামলায় রিগ্যানসহ ৭ আসামিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের নিচ তলায় হাজতখানায় এনে রাখা হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে হাজতখানা থেকে আসামিদের হালি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা মামলায় রায় প্রদানকারী ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। একই ট্রাইব্যুনালেই এ মামলা বিচারাধীন।

ট্রাইব্যুনালে আসামিদের তোলার পর বিচারক মামলাটিতে পলাতক থাকা আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিটের সম্পত্তি ক্রোকের বিষয়ে এদিন প্রতিবেদন আসায় বিচারক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদানের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেন।

এরপর বিচারক মজিবুর রহমান কাঠগড়ায় থাকা আসামি রিগ্যানকে হলি আর্টিজান মামলার রায়ের দিন তার মাথায় আইএস এর মনোগ্রাম সম্বলিত টুপি সে কোথায় পেলেন মর্মে প্রশ্ন করেন। উত্তরে রিগ্যান জানায়, ‘ভিড়ের মধ্যে কেউ দিয়েছে’।

কে দিয়েছে বিচারকের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘তাকে চিনি না’। এরপর বিচারক ‘কেন নিলেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, টুপিতে আরবিতে কলেমা সাহাদাৎ লেখা ছিল। তাই ভালো লাগায় নিয়ে পরি। 

এরপর বিচারক প্রশ্ন করেন, আর কাউকে ওই টুপি দিয়েছে কি না? জবাবে রিগ্যান বলেন, আর কাউকে দেয়নি। তবে আমাকে দেওয়া টুপিই প্রিজনভ্যানে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী পরেছিল।

উল্লেখ্য, কল্যাণপুরে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ জঙ্গি অস্তানার এ মামলায় গত ১১ এপ্রিল পুলিশের তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হয়। এরপর গত ১৮ জুলাই ট্রাইব্যুনাল চার্জশিট আমলে নিয়ে পলাতক আজাদুল কবিরাজের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ২৮ অক্টোবর ওই আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়।

মামলার আসামিরা হলেন, আসামিরা হলেন, রাকিবুল হাসান রিগ্যান (২১), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র‌্যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), হাদিসুর রহমান সাগর (৪০), আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুল্লা হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩), সালাহ্ উদ্দিন কামরান (৩০), আব্দুর রউফ প্রধান (৬৩) ও নব্য জেএমবির অধ্যাতিক নেতা সংগঠনটির একাংশের আমির মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০)।  

আসামিদের মধ্যে রিগ্যান, র‌্যাশ, সাগর, মামুন, খালেদ ও সবুর খানের গুলশানের হলি আর্টিজান মামলায় মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ‘জাহাজ বিল্ডিং’ বাড়িতে ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই ভোর রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই বাড়ির পঞ্চম তলায় অভিযান চালায়। অভিযানে ৯ সন্দেহভাজন জঙ্গি মারা যায়। রাকিবুল হাসান রিগ্যান গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হয়। একজন পালিয়ে যায় । 

ওই ঘটনায় ওই বছর ২৭ জুলাই রাতে মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক মো. শাহজাহান আলম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২), ৮, ৯, ১০, ১২ ও ১৩ ধারায়  এ মামলা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন