সন্ধান মিলল ভারতের চন্দ্রযান-২ এর ধ্বংসাবশেষের

বণিক বার্তা অনলাইন

চাঁদে অনুসন্ধানের জন্য পাঠানো ভারতের উৎক্ষেপিত দ্বিতীয় যান চন্দ্রযান ২ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মিলেছে। হারিয়ে যাওয়ার তিন মাস পরে এর খোঁজ পেল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ধ্বংসাবশেষের একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। নাসা অবশ্য হারিয়ে যাওয়া এই যানের সন্ধান পাওয়ার কৃতিত্ব দিচ্ছে এক ভারতীয় প্রকৌশলীকে।

আজ মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, নাসার প্রকাশিত এই ছবিতে বেশ কয়েকটি সবুজ এবং নীল রঙের বিন্দু ধরা পড়েছে। নাসা বলছে, সবুজ বিন্দুগুলো বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ। ছবিতে যে বড় নীল বিন্দু দেখা যাচ্ছে, সেখানেই আছড়ে পড়ে বিক্রম। বাকি যে নীল বিন্দুগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো চাঁদের মাটিতে বিক্রম আছড়ে পড়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্থান। 

চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিক্রম যেখানে আছড়ে পড়েছিল সেই জায়গার ছবি তুলেছে নাসার ‘লুনার রিকগনায়সাস অরবিটার’ (এলআরও)। প্রায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে অন্তত ২৪টি টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এলআরও-র তোলা সেই জায়গার একটি মোজেইক ছবি প্রকাশ করে নাসা। সঙ্গে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করার জন্য বিশ্ববাসীকে আমন্ত্রণও জানায় তারা।

সেই ছবির সূত্র ধরেই খোঁজ শুরু হয় বিক্রম-এর। নাসা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারতের এক মেকানিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার সান্মুগ সুব্রামানিয়াম তাদের এলআরও প্রজেক্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানে সন্মুগ দাবি করেন, নাসার প্রকাশিত ওই ছবিতে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করতে পেরেছেন তিনি। যেখানে বিক্রম ভেঙে পড়েছিল তার ঠিক ৭৫০ মিটার উত্তর-পশ্চিমে বিক্রম-এর ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেন। এ জন্য নাসা থেকে সান্মুগকে অভিনন্দন জানিয়ে মেইলও পাঠানো হয়েছে।

ওই প্রকৌশলী গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে নাসার ছবিতে ল্যান্ডারের সর্বশেষ অবস্থান ছিল। আমরা জানতাম, চন্দ্রযান-২ ঠিক কোথায় বিধ্বস্ত হয়েছে। তাই ছবিটি নিয়ে এর পিক্সেল ধরে ধরে খোঁজ করেই ধ্বংবসাবশেষ নিশ্চিত হতে পেরেছি।’

এর আগে গেল ২২ জুলাই ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ল্যান্ডার বিক্রম-কে নিয়ে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছিল চন্দ্রযান ২। ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামে বিক্রম। কিন্তু চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার ২ দশমিক ১ কিলোমিটার উপরেই ইসরো-র সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ল্যান্ডারের। তারপর বেশ কয়েক বার বিক্রম-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। পরে নাসা বিক্রম ভেঙে পড়ার কথা জানায় সংস্থাটি। বিক্রমের আছড়ে পড়ার জায়গাটি চিহ্নিত করা গেলেও ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন