বাজারে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। এতে উপকৃত হওয়ার বদলে বিপাকে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের চাষীরা। ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হওয়ায় রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে তাদের। তবে পুলিশ বলছে, পেঁয়াজ চুরির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, সদর, তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলায় পেঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর অর্ধেকই আগাম জাতের মুড়ি পেঁয়াজ। বর্তমানে এ পেঁয়াজ বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে। এবার পেঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৫৫১ টন, যার মধ্যে ৪ হাজার ২২০ টন ধরা হয়েছে আগাম জাতের।
কৃষকরা জানান, প্রতিবার পেঁয়াজ উৎপাদন করে দাম না পেলেও এবারের চিত্র বিপরীত। এবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম বাড়ার কারণে দেখা দিয়েছে চুরির উপদ্রপ। বিশেষ করে কাজিপুর ও তাড়াশে ক্ষেত থেকে গাছসহ পেঁয়াজ চুরি হচ্ছে। এ কারণে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন অনেকে।
তাড়াশ উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, নাদোসৈয়দপুর, হেমনগর, ধারাবারিষা, বামুনগাড়া, চরহামকুড়িয়া, কাঁটাবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পেঁয়াজ চুরি ঠেকাতে জমিতে পাহারা বসানো হয়েছে। রাতের বেলায় আলো জ্বেলে পাহারা দেয়া হচ্ছে।
বামুনগাড়া গ্রামের কৃষক তফের আলী ও নূরুল ইসলাম বলেন, আমাদের জমি থেকে রাতে বেশ কয়েকবার পেঁয়াজ চুরি হয়েছে। এ কারণে আমরা রাত জেগে জমি পাহারা দিচ্ছি।
ধারাবারিষা গ্রামের কফিল উদ্দিন বলেন, আগে পেঁয়াজে দাম পাইনি। এবার ভালো দাম পাচ্ছি। কিন্তু ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরি নিয়ে আমরা বিপদে আছি। রাতের আঁধারে গাছসহ পেঁয়াজ উপড়ে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। তাই এখন জমির পেঁয়াজ রক্ষায় পাহারা দিতে হচ্ছে।
নাদোসৈয়দপুর গ্রামের শারমিন খাতুন জানান, তার বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া জমিতে চার শতক জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে কে বা কারা পেঁয়াজ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। একটু আড়াল হলেই দেখা যায়, ক্ষেতের একটি অংশে পেঁয়াজ নেই।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুল আলম বলেন, পেঁয়াজ চুরির বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।