পোলট্রি মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি ও মৃত্যুহার কমাতে প্রোবায়োটিক ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) গবেষক দল। মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে প্রোবায়োটিকের কার্যকারিতার এ প্রমাণ পাওয়া গেছে। গতকাল যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ গবেষক দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি এবং যুুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের আর্থিক সহায়তায় যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষক দলে যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রভাস চন্দ্র রায়, প্রভাষক শোভন লাল সরকার ও নাইজেরিয়ার নাগরিক পিএইচডি শিক্ষার্থী রিন ক্রিস্টোফার রুবেন অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আন্তর্জাতিক কয়েকটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে তাদের এ-সংক্রান্ত গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, পোলট্রি শিল্পে অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে প্রোবায়োটিক অধিক কার্যকর, লাভজনক, স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব।
অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, অ্যান্টিবায়োটিক মুরগির অন্ত্রের সব ধরনের জীবাণু মেরে ফেলে। এতে মুরগির বৃদ্ধি কমে যায়। তাছাড়া এর অধিক ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকি। এর বিপরীতে প্রোবায়োটিক ব্যবহারের ফলে মুরগির মৃত্যুহার কমবে ও কম খেয়ে ওজন দেড়গুণ বেশি বৃদ্ধি পায়। প্রোবায়োটিক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও কমায়। এতে মুরগির রক্তে হিমোগ্লোবিন ও রোগ প্রতিরোধী কোষের সংখ্যা বাড়ে। এছাড়া ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল ও গ্লুকোজের সংখ্যা কমায়, যা ডায়াবেটিস আক্রান্ত ভোক্তার জন্য উপকারী।
তিনি বলেন, ভারতের একটি কোম্পানি পোলট্রি শিল্পের জন্য প্রোবায়োটিক বাজারজাত করে, যা আমাদের দেশে পাওয়া যায়। কিন্তু দেশীয় কোনো কোম্পানি প্রোবায়োটিক বাজারজাত করে না। দেশের স্বার্থে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।