পাইকারিতে মূল্যবৃদ্ধির আনুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। অন্যদিকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যয় ১৬ পয়সা বাড়িয়ে ১ টাকা ৩১ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি অডিটোরিয়ামে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম নিয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে এসব প্রস্তাব তুলে ধরে প্রতিষ্ঠান দুটি।
বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য রহমান মুর্শেদ, সদস্য মিজানুর রহমান ও সদস্য মাহমুদ উল হক ভুঁইয়া গণশুনানি গ্রহণ করেন। বিইআরসির সদস্য আবদুল আজিজ খান এতে উপস্থিত ছিলেন না।
শুনানিতে বিপিডিবির পক্ষে সংস্থাটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদের বক্তব্যের পর দাম প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংস্থার মহাব্যবস্থাপক কাউসার আমীর আলী। বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির পক্ষে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন কমিশনের উপপরিচালক (ট্যারিফ) মো. কামরুজ্জামান।
বিপিডিবির প্রস্তাবে বলা হয়, বিদ্যমান পাইকারি ও সঞ্চালন মূল্যহারের ভিত্তিতে সংস্থাটির ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বৈদ্যুতিক এনার্জি রেট প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৭ পয়সা। বিদ্যুতের পরিবর্তিত পাইকারি ও সঞ্চালন মূল্যহারের ভিত্তিতে ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে এটি নির্ধারিত হবে।
প্রিপেইড গ্রাহকের কাছ থেকে রিবেট ছাড়া আয়কে বিদ্যুৎ বিক্রির আয় হিসেবে দেখানোর বিষয়ে সুপারিশ করেছে মূল্যায়ন কমিটি। বর্তমানে প্রিপেইড গ্রাহকরা এক ভাগ বিদ্যুতের দাম ছাড় পায়, যেটিকে আলাদাভাবে দেখাতে বলেছে কমিশন। এছাড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ফিডারগুলোর লোড নির্ধারণ করে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারকে (এনএলডিসি) আলাদাভাবে জানানোর প্রস্তাব করা হয়।
এ সময় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘বস্তিতে দরিদ্র মানুষ বেশি বিদ্যুৎ বিল দেয়। একটি মিটারের অধীনে অনেকগুলো ঘরে লাইন দেয়া হয়। এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব কিনা? সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো বছরের পর বছর বিল দেয় না। কিন্তু তাদের বিদ্যুতের লাইন কাটা হয় না।’
এর জবাবে পিডিবি জানায়, বস্তিতে আলাদা লাইন দেয়া সম্ভব। ঢাকার বিহারি ক্যাম্প ও চট্টগ্রামের সুইপার কলোনিতে এভাবে বিদ্যুতের মিটার দেয়া হয়েছে। সেভাবে বস্তিতেও আলাদা প্রিপেইড মিটার দেয়া যেতেই পারে।
শুনানিতে আরো অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আজ সকালে ডিপিডিসি ও দুপুরে ডেসকো প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বিআরইবি ও ওজোপাডিকোর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। শুনানি শেষে ৯০ দিনের মধ্যে মূল্যহার পরিবর্তনের বিষয়ে আদেশ দেবে কমিশন।