পাবনায় পাঁচ মাসেই দেবে গেছে ১২ কোটি টাকার রাস্তা

শফিউল আলম দুলাল পাবনা

দুই দফায় ১২ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করা হয় পাবনার ফরিদপুরের পারফরিদপুর-বিএলবাড়ী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার পাকা রাস্তা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় গত ৩০ জুন। কিন্তু পাঁচ মাস যেতে না যেতেই নবনির্মিত রাস্তার খালসংলগ্ন প্রায় দুই কিলোমিটার দেবে গেছে। ফাটল ধরেছে আরো বেশকিছু অংশে। ফলে রাস্তাটি দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে ভারী যানবাহন চলাচল।

এলজিইডি ফরিদপুর উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পারফরিদপুর থেকে বিএলবাড়ী গ্রাম পর্যন্ত কিলোমিটার ৩৯০ মিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। কাজটি পান রাজশাহীর ঠিকাদার আব্দুল আওয়াল। কিন্তু তিনি নিজে কাজ না করে সেটি বিক্রি করে দেন পাবনার ঠিকাদার শাহনেওয়াজ আলীর কাছে। শাহনেওয়াজ আলী ২০১৬ সালের শেষের দিকে কাজ শুরু করে তা শেষ না করেই ২০১৮ সালে ৫০ শতাংশ বিল তুলে নেন।

অবস্থায় বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। তখন উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে ঠিকাদার আব্দুল আওয়ালকে রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য চিঠি দেয়া হয়। চিঠি পেয়ে আব্দুল আওয়াল নিজেই অসমাপ্ত কাজে হাত দেন। একই সঙ্গে তিনি রাস্তা নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধিরও আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বরাদ্দ ১০ কোটি ৬২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১২ কোটি ৩৬ হাজার ১৬৫ টাকা নির্ধারণ করে উপজেলা এলজিইডি। এরপর পুরো রাস্তার নির্মাণ শেষ হয় গত ৩০ জুন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মাণকাজ চলার সময়ই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। দেবে যায় বেশকিছু অংশ। তখন ঠিকাদার দায়সারাভাবে এসব স্থান সংস্কার করেন। এছাড়া সড়কটির প্রায় তিন কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়েছে দেওভোগ গ্রামের খালের তীর ঘেঁষে। অনেক স্থানে খালের কিছু অংশ ভরাট করেও রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বালি মাটি ব্যবহারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। তাছাড়া ধস ঠেকাতে খালের নিচ থেকে কার্পেটিং পর্যন্ত আরসিসি পিলার বসানো হয়েছে এলোমেলো দায়সারাভাবে। একইভাবে গাইডওয়াল নির্মাণের কথা থাকলেও অনেক স্থানেই তা নির্মাণ করা হয়নি। কিছু স্থানে গাইডওয়াল শুরুতেই হেলে পড়েছিল। ফলে নির্মাণের পাঁচ মাস না পেরোতেই গাইডওয়াল ব্লকসহ সড়কটি দেবে গেছে। অবস্থায়ই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছ অটোরিকশা হালকা যানবাহন।

দেওভোগ গ্রামের বাবুল খান জানান, রাস্তাটি নির্মাণের শুরু থেকেই অনিয়ম লক্ষ করা গেছে। নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এলে প্রকৌশল অফিসের কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিষয়ে জানানো হয়। কিন্তু তার পরও কাজের মানের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে কিছুদিন না যেতেই রাস্তাটি ভেঙে গেছে।

বিএলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১২ কোটির বেশি টাকায় নির্মিত রাস্তা ছয় মাসও টিকল না। এতে আমরা খুবই হতাশ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রাস্তাটির বাকি অংশও যেকোনো সময় দেবে কিংবা ধসে যেতে পারে।

ফরিদপুর এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী ইসলাম আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তার নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটি মেরামতের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাস্তাটির নির্মাণকাজের মান প্রথম দিকে খুব ভালো ছিল। কিন্তু বন্যার পানি চলে আসার কারণে শেষ দিকে কিছু কাজ তড়িঘড়ি করে করা হয়। মূলত কারণে ওই অংশ দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সমস্যা হবে না। ঠিকাদারের

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন