উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া। সাড়ে ১০ কোটি জনসংখ্যার এ দেশটি আফ্রিকার বড় বাজার। কয়েক বছর ধরে ডিজিটালাইজেশনের পথে হাঁটছে ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ নামে পরিচিত এ দেশটি। এতে একদিকে যেমন দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থান বাড়বে, তেমনি সুযোগ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগের। আর এ সুযোগ লুফে নিতে চাইছে বিশ্বের বড় বড় টেলিকম প্রতিষ্ঠান। বিনিয়োগ সম্ভাবনা যাচাইয়ে চলতি সপ্তাহে ইথিওপিয়া সফর করেছেন টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জ্যাক ডরসি ও আলিবাবা গ্রুপের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। এ দুই টেক জায়ান্টের সফর ইথিওপিয়ার ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়াকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর ব্লুমবার্গ ও বিবিসি।
আফ্রিকার দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ইথিওপিয়া সফরে টুইটার সিইও জ্যাক ডরসি দেশটির টেকসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি দেশটির টেক খাতে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা বলেছেন।
অন্যদিকে চীনা ধনকুবের জ্যাক মা ইথিওপিয়া সফরে দেশটিতে নতুন বাণিজ্য প্লাটফর্ম তৈরিতে চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ প্লাটফর্ম আফ্রিকার আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য বিকাশ ও লেনদেনে সহায়ক হবে। বিশেষত মহাদেশটির ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা এ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন। বৈঠক করেছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবে আহমেদের সঙ্গেও।
জ্যাক মা বলেন, ইথিওপিয়ার তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য দারুণ একটি অনলাইন প্লাটফর্ম আনতে আমরা দেশটির সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। আশা করছি, এটি ইথিওপিয়ার ডিজিটালাইজেশনের স্বপ্ন পূরণের পথে সহায়ক হবে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী আবে আহমেদ টুইট বার্তায় বলেন, জ্যাক মার সঙ্গে বৈঠকটি খুবই ইতিবাচক ছিল। ক্লাউড কম্পিউটিং, বিস্তৃত পরিসরে ই-কমার্স ও প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ড চালু করতে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইথিওপিয়া সরকার ২০২০ সালের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে ৩০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে। এজন্য বিদেশী কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে ইথিওপিয়ার অর্থনীতি উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে।
চীনের সহায়তায় চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর দেশটি প্রথমবারের মতো কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠাতে যাচ্ছে। আউটসোর্সিংসহ তথ্যপ্রযুক্তির নানা খাতের উন্নয়নে নেয়া হয়েছে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। মূলত এসব কারণে টেক জায়ান্টদের মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হয়েছে আফ্রিকার এ দেশটি। বাজার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে টুইটার ও আলিবাবার প্রধানরা ছুটে গেছেন ইথিওপিয়ায়। এর মধ্য দিয়ে আগামী দিনগুলোয় আফ্রিকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে ডিজিটাল ইথিওপিয়া।