রামানুজনের গাণিতিক প্রতিভা

মেহেদী মাহমুদ চৌধুরী


[পূর্বপ্রকাশেরপর] একপর্যায়ে তিনি গণিতের ওপর দু-একটা গবেষণা প্রবন্ধ লেখেন। ব্রিটিশ ভারত থেকে প্রকাশিত একটা গণিতের জার্নালে লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। রামানুজন তত্কালীন মাদ্রাজ বন্দরের অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ পান অংক কষায় দক্ষতার কারণে এবং সেই সুবাদে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রামানুজনের প্রতিভা সম্পর্কে অবগত হন। ব্রিটিশ কর্মচারীদের অনেকেই গণিত বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন, রামানুজনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ তৈরি হয়। কিন্তু তাদের কেউই রামানুজনের প্রতিভাকে পূর্ণভাবে বুঝতে পারেননি।


বন্ধুদের সহায়তায় রামানুজন ব্রিটেনের কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত গণিতবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। সময়ে তিনি কয়েকজনকে চিঠি লিখেছিলেন বলে জানা যায়। তার মধ্যে একটা চিঠি ছিল গডফ্রি হার্ডিকে লেখা। হার্ডি সেই চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন। সেই থেকে রামানুজনের চিঠি গণিতের কল্পকাহিনীর অংশ। চিঠি লেখার সময় রামানুজনের বয়স ছিল পঁচিশের মতো। চিঠি পাঠানোর তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ১৯১৩। রামানুজন থেকে ১০ বছরের বড় হার্ডি তখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে অধ্যাপনা করতেন। আধুনিক গণিতের সব শাখা সম্পর্কে তার কমবেশি জানাশোনা ছিল। সেই সময়ে তিনি নাম্বার থিওরি নামে গণিতের একটা শাখার ওপর আগ্রহী হয়ে উঠছিলেন এবং জন লিটলউড নামের আরেক গণিতবিদের সঙ্গে গবেষণা শুরু করেছিলেন।


গণিতে রামানুজনের কাজও নাম্বার থিওরিতে। তাই হার্ডিকে চিঠি পাঠানো ছিল যথাযথ সিদ্ধান্ত। চিঠি পেয়ে হার্ডি রীতিমতো অবাক হন। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তাই প্রথমে তিনি লিটলউডের সঙ্গে কথা বলেন। তারা দুজনে চিঠিটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে থাকেন। অনেকের সঙ্গে আলোচনাও করেন। হার্ডি আর লিটলউডের সেই উদ্দীপনার এক প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন সে সময়ে কেমব্রিজে কর্মরত আরেক বিখ্যাত গণিতবিদ দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল। রাসেল সে ঘটনা সম্পর্কেও লিখেছিলেন।


কী ছিল রামানুজনের সেই চিঠিতে? রামানুজন চিঠির শুরুতে নিজেকে মাদ্রাজ বন্দরের একজন কর্মচারী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পরে তিনি চিঠির সঙ্গে জুড়ে দেন ১১ পৃষ্ঠাব্যাপী গাণিতিক সূত্র, যেগুলো রামানুজন নিজে থেকেই বের করেছিলেন। রামানুজন জানতেন না যে ওই সূত্রগুলোর বেশ কয়েকটি আগের গণিতবিদরা বের করতে সমর্থ হয়েছিলেন। হার্ডিও সেগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন। আগে বের করা হয়নি এমন কয়েকটি সূত্র হার্ডি কীভাবে বের করা হয়েছিল বুঝতে পারলেও কয়েকটি সূত্র কীভাবে বের করা হয়েছে তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেননি।


হার্ডি রামানুজনের সেই চিঠির উত্তর দেয়ার পরে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়। হার্ডি একটা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করেন, যার ধারাবাহিকতায় রামানুজন অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে ১৯১৪ সালে ব্রিটেনে এসে পৌঁছেন। তারা এর পরে একসঙ্গে কাজ শুরু করেন এবং বেশকিছু

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন