মশার ব্যাপক বিস্তৃতি

নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি এবং বছরব্যাপী পদক্ষেপ নেয়া হোক

ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপক আকারে দেখা দেয়ার পর মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি জোরেশোরে আলোচনায় আসে। তবে তাত্পর্যপূর্ণভাবে আলোচনা প্রথম দিকে ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কর্মসূচিকেন্দ্রিক থাকলেও ৬৪ জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বোঝা যায় এর ব্যাপকতা। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, এতদিন ধারণা করা হতো শহরে এডিস ইজিপটাই প্রজাতির মশা কেবল ডেঙ্গু ছড়ায়, কিন্তু অতিসম্প্রতি জানা গেছে এডিস অ্যালবোপিকটাস প্রজাতির মশা গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। অথচ মশা নিয়ন্ত্রণ কিংবা ধ্বংসে দেশে কেন্দ্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান বা কর্মসূচি নেই। মশার প্রজননস্থল, ধরন, প্রজাতি, সংখ্যা, কোন ধরনের কীটনাশকে মশা মারা যায়, কোন ধরনের রোগের জীবাণু বহন করেএসব বিষয় নিয়ে যারা গবেষণা করেন, সেই কীটতত্ত্ববিদের সংকট রয়েছে দেশে।

অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ যে মশা বিস্তারের জন্য দায়ী, সে কথা সংশ্লিষ্টদেরও অজানা নয়। মশার ওষুধ নিয়ে যে কারসাজি হয়, তা- নতুন কিছু নয়। ভুক্তভোগীমাত্রই স্বীকার করবে যে মশক নিধনে ওষুধ কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রকৃত প্রস্তাবে মশক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার লার্ভার বিস্তার রোধে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হয়। এছাড়া মশক নিধনের বেলায়ও বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা রয়েছে। শহরে যে পরিমাণ সতর্ক কর্তৃপক্ষ, গ্রামে কোনো উদ্যোগই দেখা যায় না। মশা নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা অব্যাহত থাকলে দেশে আবারো ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকবে। কিছুদিন আগে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে চরম দুর্ভোগে পড়েছিল। নতুন করে এখন আবার মশার প্রাদুর্ভাব দেখা যাওয়ায় চিকুনগুনিয়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এটা ঠিক, জনগণ দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দিলে কেবল মশক নিবারণী দপ্তরের উদ্যোগে গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে এডিসসহ অন্যান্য মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। মশা নিধনের মতো জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা, বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক।

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং নগর কর্তৃপক্ষের বিশেষভাবে লক্ষ রাখা উচিত সাধারণ জনগোষ্ঠী সুস্থ দেহে নিরাপদ আর নির্বিঘ্নে যেন তাদের প্রতিদিনের জীবন কাটাতে পারে। জনকল্যাণমূলক এসব প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষের রায়ের ভিত্তিতে কর্তৃত্ব লাভ করে। সুতরাং শুরু থেকেই জনগণের সেবা প্রকল্পে তাদের পাশে সার্বক্ষণিক থাকা এমন সব প্রতিষ্ঠানের নৈতিক দায়বদ্ধতা। সরকারের দাবি নতুন কার্যকরী ওষুধ এবার বিভিন্ন জায়গায় ছিটানো হবে। পাশাপাশি জনগণের সতর্কতা সচেতনতার ঘাটতি হলে পরিস্থিতি বেসামাল হতেও সময় নেয় না। সারা বছর যেকোনো সময় মশার কামড় বংশবিস্তার এক অপরিহার্য বিষয়। এটি মাথায় নিয়ে মশক নিধন অভিযান সারা বছরই চালাতে হবে। সবসময় ওষুধপত্রও মজুদ রাখা বাঞ্ছনীয়। তার চেয়েও বেশি জরুরি এমন মশানাশক ওষুধ দেশেই তৈরি করা।

চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সংকট যেমন আছে, তেমনি চিকিৎসাসংক্রান্ত নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগও বিদ্যমান। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার ডেঙ্গুসংক্রান্ত ভয়াবহতাকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া এবং তা বাস্তবায়নে যথাযথ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন