ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মোয়াজ্জেমকে ১০ লাখ জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানার ওই অর্থ আদায় করে নুসরাতের পরিবারকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন । তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নুসরাত জাহানের ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম যে অপরাধ করেছিলেন, সেটি আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি দাবি উচ্চ আদালতে যাবেন বলেন জানিয়েছেন ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ ।
সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত গত মার্চ মাসে তার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সেসময় সোনাগাজী থানায় তার জবানবন্দি নেন তত্কালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। তার কয়েক দিন পর মাদ্রাসার ছাদে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে আগুন দিলে সারাদেশে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তখন নুসরাতের ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১০ এপ্রিল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত তা আমলে নিয়ে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন। ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে আসামি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ১৭ জুন তাকে ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিনই ফেনী সোনগাজী থানার এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম মোয়াজ্জেমকে আদালতে হাজির করে। পরে জামিন আবেদন করলে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ১৭