ইউএমসিএ চুক্তি সমন্বয়ের চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা

বণিক বার্তা ডেস্ক

একটি আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির চূড়ান্ত রূপ দিতে আলোচনায় বসেছেন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডার শীর্ষ বাণিজ্য সমঝোতাকারীরা। চুক্তিটি যাতে মার্কিন কংগ্রেসের বাধা পেরোতে সক্ষম হয়, সে বিষয়ে কাজ করছেন তারা। খবর রয়টার্স।

একটি সাবেক ত্রিদেশীয় বাণিজ্য চুক্তির পরিবর্তন করে নতুন ইউনাইটেড স্টেটস-মেক্সিকো-কানাডা এগ্রিমেন্ট (ইউএমসিএ) স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা।

ত্রিদেশীয় চুক্তিটি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর দেশগুলো শর্ত নিয়ে একমতে পৌঁছলেও বেশকিছু সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মেক্সিকোর উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী জেসাস শেড জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চুক্তিটির কিছু সমন্বয়ের প্রয়োজন পড়তে পারে, বিশেষ করে শ্রম ইস্যুতে। তবে একটি ভালো বাণিজ্য চুক্তির স্বাভাবিক টেরিটোরির মধ্যে থেকেই তা সম্পন্নের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, চুক্তিটিতে শ্রম মানদণ্ডের আরো কঠোর বাস্তবায়ন চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক আইনপ্রণেতারা।

চুক্তিটি নিয়ে আলোচনা করছেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার, মেক্সিকোর শীর্ষ বাণিজ্য সমঝোতাকারীর শেড ও কানাডার উপপ্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। তবে কোনো কর্মকর্তাই চুক্তির বিষয়বস্তু বা সময় নির্ধারণ নিয়ে বিস্তারিত কিছু তথ্য দেননি।

স্থানীয় সময় বুধবার মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির ভবনে প্রবেশের আগে ফ্রিল্যান্ড জানান, সময়সীমা নিয়ে আগাম কিছু বলাটা অনুচিত হবে। পরে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চুক্তিটি তিন দেশের অনুমোদন পেলে তা কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস রয়েছে। এটা আসলে আমাদের পুরো মহাদেশের জন্যই ইতিবাচক হবে।

শেড জানান, সবকিছুই সঠিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তিনিও চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়ে কোনো সময়সীমার কথা জানাননি।

কংগ্রেসের অনুমোদন পাওয়ার মতো একটি চুক্তি নিশ্চিত করতে বেশ কয়েক মাস ধরে ডেমোক্রেটিক-নিয়ন্ত্রিত হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভদের সঙ্গে কঠোর আলোচনা করে যাচ্ছেন লাইটহাইজার। সোমবার হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি জানান, মার্কিন-মেক্সিকো-কানাডার মধ্যে বহু আকাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। এর আগে চলতি বছরেই চুক্তিটি অনুমোদন পেতে পারে বলে চলতি মাসের শুরুতে জানিয়েছিলেন তিনি।

সোমবার পেলোসি জানান, এই সংশোধিত চুক্তিটি মার্কিন শ্রমবাজারকে শক্তিশালী করার কথা। কিন্তু চুক্তির শর্তের ফলে এখনো মার্কিন শ্রমিকরা মেক্সিকান শ্রমিকদের কাছে কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকিতে রয়ে গেছে। চুক্তিতে ব্যবস্থাপত্র নির্দেশিত ওষুধের উচ্চদাম নিয়ে অগ্রহণযোগ্য শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং প্রধান পরিবেশগত মানদণ্ড পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত চাপের মুখে গত বছর ইউএমসিএ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা মূলত ১৯৯৪ সালে স্বাক্ষরিত ত্রিদেশীয় নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের (নাফটা) চুক্তির পরিবর্তিত রূপ।

চলতি বছরের শুরুতে মেক্সিকো আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিটি অনুমোদন করলেও এখনো যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন বাকি রয়েছে। ওয়াশিংটনের পর চুক্তিটি অনুমোদন করা হবে বলে অটোয়া জানিয়েছে।

ইউএমসিএ নিয়ে আগামী ত্রিপক্ষীয় কোনো বৈঠক নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা, সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে শেড জানিয়েছেন, চুক্তি নিয়ে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের সঙ্গে আরো বিস্তারিত আলাপের জন্য তিনি আজ কানাডা সফর করতে পারেন। একই সঙ্গে চুক্তির দ্রুত চূড়ান্ত অনুমোদন নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করেছেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন