ইরা মুখোতি। অনুবাদ: রিফাত আনজুম
১৬৫৭ সালের সেপ্টেম্বরের
এক নির্মম
দিনে মোগল
সম্রাট শাহজাহান
এমনই গুরুতর
অসুস্থ হয়ে
পড়েন যে
পরপর বেশ
কয়েক দিন
তাকে কিলা-ই-মুবারকের
ঝারোখায় রোজকার
দর্শনদান থেকে
বিরত থাকতে
হয়। আপাতদৃষ্টিতে
নির্দোষ এ
কর্তব্যচ্যুতি অদূরভবিষ্যতে
সর্বনাশা পরিণতি
বয়ে আনবে।
এ ঘটনা
মোগল ইতিহাসে
সিংহাসনের জন্য
উত্তরাধিকারীদের মধ্যকার
দীর্ঘতম ও
তিক্ত যুদ্ধের
দিকে গড়াবে
এবং শেষ
পর্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ
রাজকীয় রাজধানী
শাহজাহানাবাদের পতন
ঘটবে। এটা
পিতার সুনজরপ্রাপ্ত
ভাই ও
বোন—জাহানারা
আর দারা
শুকোর ভাগ্যের
চাকাকে একেবারে
উল্টো দিকে
ঘুরিয়ে দেবে।
দারা শুকো ও জাহানারা সর্বক্ষণ শাহজাহানের বিছানার পাশে এবং সেখানে অন্য কারো প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। বিষ মেশানোর ষড়যন্ত্র রুখতে জাহানারা নিজে সম্রাটের খাবারের তদারক করছেন। সম্রাটকে ‘পুদিনা ও মান্নার সুরুয়া’ দেয়া হয় পানি জমে হাত-পা ফুলে যাওয়া রোগের পথ্য হিসেবে। খবরটা যেন তার ভাইদের কানে পৌঁছতে না পারে, সেজন্য দারা সব ধরনের সংবাদবাহকের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। প্রাসাদের প্রবেশদ্বার বন্ধ এবং শুধু অত্যন্ত বিশ্বস্ত রাজপুত সেনাদের একটা দল সেখানে পাহারায় নিয়োজিত। দারা চেষ্টা করেন দরবারে তার ভাইদের প্রতিনিধিদের মুখ বন্ধ রাখতে এবং সেজন্য সাময়িকভাবে আওরঙ্গজেবের ব্যক্তিগত উকিল ঈসা বেগকে বন্দি করেন। কিন্তু দরবারে রয়ে যান আওরঙ্গজেবের খবর পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ উৎস—বোন রোশনারা বেগম। রোশনারার বয়স তখন ৪০। বোন জাহানারার প্রতিটি পদক্ষেপই প্রশংসিত, তার ঝলমলে ব্যক্তিত্বের ছায়ায় রোশনারা যাপন করেছেন নীরব, অনালোচিত জীবন।
জাহানারা সবার অত্যন্ত প্রিয় এবং এতটাই বিচক্ষণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী যে রোশনারা জানেন, তিনি গুজব ও কলঙ্কের ঊর্ধ্বে। কিন্তু একজন আছেন, যিনি অতটা ত্রুটিমুক্ত নন এবং যাকে আসমান থেকে মাটিতে টেনে নামানো <