উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন
মূলধনি যন্ত্রপাতি কিনবে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড। এ কাজে ৯৭ লাখ ৫০ হাজার
ডলার বা প্রায় ৮২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে তারা। এদিকে প্যারামাউন্ট ড্রেজিং
লিমিটেড নামে নতুন একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্যারামাউন্ট
টেক্সটাইলের পরিচালনা পর্ষদ। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়।
কোম্পানি সূত্র অনুযায়ী, নিজেদের
থার্মোসোল ডায়িং, সলিড ডায়িং, কন্টিনিউয়াস ওয়াশিং,
ব্লিচিংসহ বিভিন্ন ইউনিটের উৎপাদন সক্ষমতা
বৃদ্ধি এবং ক্রেতাদের পছন্দ ও চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি
করবে তারা। ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা প্রায় ৮২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ
ব্যয়ে এসব যন্ত্রপাতি কিনবে কোম্পানিটি। এক্ষেত্রে তাদের ঋণসুবিধা দেবে পূবালী
ব্যাংক লিমিটেড।
এদিকে প্যারামাউন্ট ড্রেজিং লিমিটেড
নামে নতুন একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। নতুন কোম্পানিতে
তাদের বিনিয়োগ থাকবে ৬৫ শতাংশ।
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের একজন
কর্মকর্তা জানান, দেশের ড্রেজিং ব্যবসাকে ফোকাস করে প্যারামাউন্ট ড্রেজিং নামে নতুন একটি
কোম্পানি গঠন করা হবে। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন হবে ১ কোটি টাকা। এতে
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের সিস্টার কনসার্ন প্যারামাউন্ট হোল্ডিংস লিমিটেডের
মাধ্যমে ৬৫ শতাংশ শেয়ারে বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়া ১০ শতাংশ শেয়ার প্যারামাউন্ট
ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওয়াজ আহমেদ ও বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ার অন্য একটি
কোম্পানির হাতে থাকবে। কোম্পানিটি গঠনের প্রক্রিয়া এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে
বলে জানান তিনি।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য
শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছে প্যারামাউন্ট
টেক্সটাইলের পরিচালনা পর্ষদ। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে
৩ টাকা ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে
২২ টাকা ১৭ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৯ টাকা ৭৯ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)।
আগামী ৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় রাজধানীর
গুলশান-১-এ অবস্থিত স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারের কিংস হলে কোম্পানিটির
বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ছিল ১৮ নভেম্বর।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম
প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩৪ পয়সা, আগের
হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৯ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা
৫১ পয়সা।
বিএমআরইর মাধ্যমে কারখানা সম্প্রসারণ
ও নতুন প্রিন্টিং ইউনিট চালুর সুবাদে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে ভালো
ব্যবসা করেছিল প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। সে হিসাব বছরে কোম্পানিটির বার্ষিক বিক্রি
বেড়েছিল প্রায় ২৩ শতাংশ। আর এর সুবাদে বার্ষিক নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৩
দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ
স্টক লভ্যাংশ দেয় প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। ২০১৭ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি
১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। সে হিসাব বছর ইপিএস
ছিল ১ টাকা ৯২ পয়সা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল
প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৫৩ টাকা ৮০ পয়সা। সমাপনী দর ছিল ৫৪
টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৪৮ টাকা ১০ পয়সা
ও ৭৫ টাকা।
২০১৩ সালে তালিকাভুক্ত প্যারামাউন্ট
টেক্সটাইলের অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৩৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
রিজার্ভে রয়েছে ৭৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ৫৪ লাখ ৯৯ হাজার
৮২৯, যার
৬০ দশমিক ৭৫ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৪
দশমিক ১৪ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ২২ দশমিক ৬৭ শতাংশ সাধারণ
বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।