ব্যয়সাশ্রয়ী ও নিরাপদ অটোমেশন আর্থিক অপরাধ কমাবে

ড. মো. আখতারুজ্জামানের সাক্ষাৎকার

বিআইবিএমের মহাপরিচালক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সের ক্লেয়ারমন্ট-এফডি ইউনিভার্সিটি থেকে যথাক্রমে উন্নয়ন বাণিজ্য অর্থনীতির ওপর এমফিল পিএইচডি অর্জন করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন প্রায় এক দশক। জাপানের তুসুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং রিসার্চ ফেলোর পাশাপাশি শিক্ষকতা করেছেন এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের আগে সংস্থাটির গবেষণা বিভাগে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। বিআইবিএমের বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন সামনে রেখে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা

এবারের আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সম্মেলনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য কী?

অষ্টম বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলন হতে যাচ্ছে। গত সাত বছরের মতো এবারো ব্যাংকার, গবেষক, একাডেমিশিয়ানদের নিয়ে একটি প্রফেশনাল নলেজ শেয়ারিং প্লাটফর্ম গড়ে তোলা মূল লক্ষ্য। প্লাটফর্মে বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাংকার, গবেষক, শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের ব্যাংকার, গবেষক, শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করছেন।

 

আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বিআইবিএম কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?

প্রথম দিকে বিআইবিএমের মনোযোগ ছিল প্রশিক্ষণকেন্দ্রিক। তবে ব্যাংকিং খাত এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণাকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। রিভিউ ওয়ার্কশপ, রিসার্চ ওয়ার্কশপের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের উচ্চ মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর বাইরে সাতটি সার্টিফিশন কোর্স চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন লেভেলে ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসির ওপর জোরারোপ করা হয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় শুধু প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বরং গবেষণালব্ধ এবং বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণে জোর দেয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকিং খাত থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

 

ব্যাংকিং খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী?

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ব্যাংকিং খাতে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ। সুশাসনকে আরো কার্যকর করার জন্য প্রচলিত আইনি কাঠামো অবকাঠামো উভয়ই যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। ব্যাংকিং খাতের মানবসম্পদের আরো উন্নয়ন প্রয়োজন। সুশাসন খেলাপি ঋণের বিষয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকিং সেবাকে পূর্ণাঙ্গভাবে অটোমেশন প্লাটফর্মে রূপান্তর পরিচালনা করা, পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব টেকসই ব্যাংকিং নীতি কার্যকর করাএসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন।

 

ব্যাংকিং খাতে ওভার ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন? একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা কী বলে?

বাংলাদেশের আর্থিক খাত যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়। যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাত ছয়-সাতটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে, যেখানে ব্যাংকিং উপখাতের অবদান অন্যতম। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের পণ্য অন্য দেশের তুলনায় অর্থনীতিতে অনেক বেশি নির্ভরশীল। এখানের আর্থিক খাত মূলত ব্যাংকভিত্তিক। পর্যাপ্ত ব্যাংক জনবল অবকাঠামো বিশেষ করে অটোমেশন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে এখনো অতিরিক্ত বিনিয়োগ হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে অপ্রতুল বা ঘাটতি রয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যাংকিং খাত ঢেলে সাজানোর সুযোগ রয়েছে।

 

বাংলাদেশে ব্যাংক ব্যাংকিং নিয়ে গবেষণার হালচাল কেমন?

ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। তবে অ্যাকশন বা সমস্যাভিত্তিক গবেষণা তুলনামূলক কম। ব্যাংকিং অটোমেশন, পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং কৌশল, সুশাসন ব্যাংকিং নেতৃত্ববিষয়ক গবেষণার ওপর জোর দেয়ার যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিদেশে প্রচলিত ব্যাংকিং প্রডাক্ট কোনো ধরনের কাস্টমাইজ না করে বাংলাদেশে প্রচলন করা হয়, যা গ্রাহকদের মধ্যে কোনো সাড়া ফেলতে পারে না। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন