বেদখল বরেন্দ্র অঞ্চলের ১৪ হাজার খাস পুকুর

জলাধার সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা হোক

বাংলাদেশসহ সন্নিহিত জনপদগুলোর মধ্যে প্রথম মানববসতির আদি ভূমিখ্যাত দেশের উত্তর-পশ্চিমের বরেন্দ্র অঞ্চলটি বৈচিত্র্যপূর্ণ আর ঐশ্বর্যমণ্ডিত। নৃবিজ্ঞানী, সমাজতাত্ত্বিক, ইতিহাস-সাহিত্য উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ এবং প্রবীণজনের তথ্যে জানা যায়, বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ছিল বৈচিত্র্যময়। বিস্তীর্ণ তৃণাচ্ছাদিত সমতল ভূমি, ঘন বনজঙ্গল, গড়-পাহাড়, নদী-নালা, খাল-খাঁড়ি-বিল, জলাশয় মিলে অনুকূল ভূপ্রাকৃতিক পরিবেশ জলবায়ু, প্রাণিজ বনজ খাদ্যবস্তুর প্রাচুর্যে ভরপুর ভূভাগ আদিকাল থেকেই মানববসতির উপযুক্ত এক অনুপম ক্ষেত্র হিসেবে বিদ্যমান ছিল। বর্তমান সময়ের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণে মরা মৃতপ্রায় নদ-নদী, পরিত্যক্ত খাল-খাঁড়ি, বিল, অসংখ্য জলাশয়, শিলালিপি, উঁচু-নিচু ভূবৈশিষ্ট্যই প্রমাণ করে দেয় অঞ্চলটির অতীতের সবুজ ইতিহাস। কিন্তু কালের বিবর্তনে ঐশ্বর্য সমৃদ্ধময় জনপদটি বর্তমানে নানা সংকটময় পরিস্থিতির শিকার। দিনে দিনে সংকট আরো ঘনীভূত হয়ে উন্নয়নবিদদের নানা পদ্ধতি প্রয়োগের শিকারে পরিণত হয়েছে জনপদ। বসবাসরত জনগোষ্ঠীর সচেতন প্রবীণ অভিজ্ঞ জনসহ নানা পেশার মানুষের সমন্বিত মতামতে উন্নয়ন পদ্ধতির প্রয়োগ হচ্ছে খুব কমই। যার কারণে সাময়িক কিছু সমস্যা সমাধান হচ্ছে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সংকট আরো প্রসারিত থেকে বহুমুখী দুর্যোগে রূপান্তর হচ্ছে। গতকাল বণিক বার্তায় প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরেন্দ্র অঞ্চলের ১৪ হাজার খাস পুকুর বেদখল হয়েছে। প্রশাসনের সামনেই এসব দখল চললেও তা বন্ধে কারো সক্রিয়তা লক্ষ করা যায়নি।

নব্বইয়ের দশকের অনেক আগে থেকেই অঞ্চলটিকে কেন্দ্র করে নানামুখী উন্নয়ন বাস্তবায়নসহ গবেষণা পর্যালোচনা হয়ে আসছে। বেশির ভাগ উন্নয়ন গবেষণায় পানি সংকটের সমাধানে পানি ব্যবস্থাপনাসহ ফসল চাষের বিষয়টিই বেশি আলোচিত হয়েছে। ফলে বরেন্দ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের উন্নয়নে পানি সমস্যা সমাধানসহ অধিক পানি নির্ভরশীল ধান উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কিন্তু পর্যালোচনায় দেখা যায়, পানি ব্যবস্থাপনায় পানির অপচয় রোধে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় জনচেতনতা এবং বাস্তবভিত্তিক গবেষণা সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রায় হয়নি। বরেন্দ্র অঞ্চলের পুকুরসহ জলাশয় এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে ব্যবহার করে আসছিল। বিশেষ করে গোসল করা এবং কাপড়সহ অন্যান্য গৃহস্থালি জিনিসপত্র ধোয়ামোছার কাজে এসব ব্যবহার করছিল। কিন্তু বর্তমানে দখলীকৃত এসব জলাশয় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জলাশয় রক্ষা আইন থাকলেও তার কোনো প্রয়োগ নেই। অভিযোগ রয়েছে, দীঘি কিংবা জলাশয় ভরাটে কিছু লোক সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কৌশলে নানা কায়দায় জলাশয়গুলোকে মজা কিংবা পরিত্যক্ত করে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। ১৯৩৯ সালের পুকুর উন্নয়ন আইনে বলা হয়েছে, বেসরকারি মালিকানাধীন পতিত হিসেবে চিহ্নিত কোনো দীঘি বা পুকুরের প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক কাজ করে তা মাছ চাষের আওতায় আনার জন্য জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুকুর মালিককে নোটিস দেবেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসও দীঘি জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে নোটিস কিংবা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকেও এসব জলাশয় রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই।

ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৭০ শতাংশজুড়ে পানি থাকলেও মাত্র শতাংশ পানযোগ্য। তারও আবার বিরাট অংশ রয়েছে অ্যান্টার্কটিকা গ্রিনল্যান্ডে বরফ হিসেবে। এজন্য ভূগর্ভস্থ পানির স্তর স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ভূ-উপরিভাগের মিঠা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন