লক্ষ্মীপুরে শাশুড়িকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে পুত্রবধূসহ চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহেনূর এ রায় ঘোষণা করেন। নিহতের নাম জাকেরা বেগম। তিনি সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মপুর গ্রামের প্রবাসী রুহুল আমিনের স্ত্রী।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন পুত্রবধূ শারমিন আক্তার ও জামাল, নাজিম ও জসিম। আসামিরা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মৃত জাকেরা বেগমের ছোট ছেলে আবুল বাশার ঢাকায় ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। বাশারের অনুপস্থিতিতে শারমিন আসামি জামালের সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানার পর জাকেরা বেগম শারমিনকে এ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে বলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শারমিন। পরিকল্পনা মতো ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই গভীর রাতে বাসার কলাপসিবল গেট খুলে অন্য আসামিদের নিজ কক্ষে নিয়ে যান শারমিন। তাদের কথা শুনে ঘুম থেকে উঠে সেখানে গিয়ে আসামিদের দেখতে পান জাকেরা। এ সময় আসামিরা জাকেরাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের দেবর খোরশেদ আলম বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই আসামি জসিম উদ্দিনকে নতুন তেওয়ারীগঞ্জ গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে জাকেরাকে হত্যার দায় স্বীকার এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের নাম আদালতকে জানান জসিম। পরে পুলিশ মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেফতার করে। আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ ও শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে গতকাল রায় ঘোষণা করেন আদালত। তবে বিচার চলাকালে চার আসামি জামিন নিয়ে পালিয়ে যান।
রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. জসিম উদ্দিন। তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।
