কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন আর নেই

বণিক বার্তা অনলাইন

একুশে পদকজয়ী কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রবিউল হুসাইনের মৃত্যু হয়। 

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অনুষ্ঠান সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম জানান, ৭৬ বছর রবিউল হুসাইনের রক্তের জটিলতায় ভুগছিলেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।

রবিউল হুসাইনের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। ওনার বড় বোন লন্ডন থেকে রওনা হয়েছেন। তিনি আসার পর রবিউল হুসাইনের মরদেহ আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমি, সাড়ে ১০টায় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজার পর মরদেহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও স্থপতি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হবে। বিকেলে তার মরদেহ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ভাষা ও সাহিত্যে অবদান রাখায় ২০১৮ সালে একুশে পদক পান কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন। তিনি একাধারে স্থপতি, কবি, শিল্প-সমালোচক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্রের ট্রাস্টি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য।

১৯৪৩ সালের ৩১ জানুয়ারিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপার রতিডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রবিউল হুসাইন। কুষ্টিয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে তিনি ভর্তি হন ইস্ট পাকিস্তান ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজির (বর্তমান বুয়েট) আর্কিটেকচার ফ্যাকাল্টিতে। ১৯৬৮ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং স্থপতি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

রবিউল হুসাইনের নকশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তি ও স্বাধীনতা তোরণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটক, ভাসানী হল, বঙ্গবন্ধু হল, শেখ হাসিনা হল, খালেদা জিয়া হল, ওয়াজেদ মিয়া সায়েন্স কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ও একাডেমিক ভবন কমপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে।

বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য রবিউল শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলা, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।

ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি শুরু করেছিলেন রবিউল হুসাইন। কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস মিলিয়ে দুই ডজনের বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। রবিউল হুসাইনের লেখা উল্লেখযোগ্য বই হলো ‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘আরও উনত্রিশটি চাঁদ’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’, ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’ ইত্যাদি।

বণিক বার্তায় রবিউল হুসাইনের লেখা

পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা স্থাপত্যের আধুনিক যুগ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন