বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু

যেভাবে অর্থ পাচার করছেন ভারতের অতি ধনীরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতের অতি ধনী বা কিছু উচ্চ আয়ের ব্যক্তি (হাই নেট-ওর্থ ইনডিভিজ্যুয়াল-এইচএনআই) বিদেশে বিভিন্ন করপোরেট কাঠামো দাঁড় করিয়ে সেখানে অর্থ বিনিয়োগ করছেন। আইনের ফাঁক গলিয়ে ভারত থেকে সেখানে বড় অংকের অর্থ পাচার করছেন তারা। এমনটাই দাবি করছে ভারতের কেন্দ্র সরকারের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং এজেন্সি দ্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

২ নভেম্বর মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কামাল নাথের ভাইপো রাতুল পুরির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার পাশাপাশি পৃথক একটি অনুচ্ছেদে কীভাবে অর্থ পাচার হয়, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে ইডি। অগাস্তাওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার চুক্তিতে অনিয়মের অভিযোগ এনে রাতুল পুরির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করছে অর্থ পাচারবিরোধী সংস্থাটি।

বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করছে অতি ধনীদের একটি অংশ; এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা প্রযুক্তিতে বেশ দক্ষ। ইডি বলছে, নিজেদের পরিচয় গোপন করা তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এইচএনআই বা উচ্চ নিট আয়ের ব্যক্তিরা কীভাবে করপোরেট পর্দার আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখছেন, সে ব্যাপারে ইডির চার্জশিট বা অভিযোগপত্রে বলা হয়; তারা হাওলা দালাল বা তার সহযোগীদের হয় তারা সৃষ্টি করেন, না হয় ওই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করেন। তাদের লভ্যাংশ হস্তান্তরের জন্য তারা এমন বিকল্প ই-মেইল আইডি সৃষ্টি করেছেন অথবা পদক্ষেপ নিয়েছেন, যাতে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারেন।

ইডির অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, আইনের ফাঁদ এড়াতে তারা বিদেশে করপোরেট কাঠামো তৈরি করেছেন। যদি তারা আটকা পড়েন, তখন যেন বিচারিক প্রক্রিয়া বিলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত হয়। এইচএনআইরা বিদেশে এমন কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করছেন, যেখানে তারা কোনো শেয়ারহোল্ডারের নামে বিনিয়োগ করেন, যারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওই দেশের নাগরিক।

নিত্যনৈমিত্তিক কাজ পরিচালনার জন্য ওই কোম্পানিতে একজন পরিচালক ও ব্যবস্থাপক টিম নিয়োগ দেয়া হয়। যেহেতু কোনো এইচএনআই অন্য দেশে আইনত ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন না, সেজন্য বিদেশী টিম প্রাত্যহিক কাজ পরিচালনা করে থাকে। ভারতীয় গ্রাহকদের নির্দেশনায় কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ফি পেয়ে থাকেন ওই বিদেশী ব্যক্তিরা।

ব্যাংক হিসাব চালু করা এবং অর্থ লেনদেনের জন্য এইচএনআইকে সহায়তা করে বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, ছায়া পরিচালক (ডামি ডিরেক্টর), বৈদেশিক সম্পর্ক বা পোর্টফোলিও ম্যানেজার ও ব্যাংকাররা।

ইডি বলছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে একই ব্যক্তি বা করপোরেট কাঠামো বিভিন্ন ব্যক্তি/এইচএনআইয়ের অর্থ ব্যবস্থাপনা করেন। সমাধান হচ্ছে, এ ধরনের অর্থ পাচারে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষকে চিহ্নিত করে আরো প্রমাণ সংগ্রহ করা।

এ ধরনের হোয়াইট কালার অপরাধ বিশেষজ্ঞ শেরবির পানাং বলেন, এলআরএস (লিবারালাইজড রেমিট্যান্স স্কিম) ব্যবহার করে এইচএনআইরা বিদেশে অর্থ পাচার করেন। এছাড়া আরো অন্যান্য বৈধ উপায়েও অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। তবে এ ধরনের অর্থ লেনদেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কালো টাকার মালিক বললে বিষয়টি অতি সরলীকরণ হবে বলে মনে করেন এ দিল্লিভিত্তিক আইনজীবী।

রাতুল পুরির মামলায় দেখা গেছে, তার অর্থ ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে ইডি। পুরির আইনজীবী বিজয় আগারওয়াল ইডির প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্যে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন