উন্নত দেশ গড়তে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ২০৪১ সাল নগাদ বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার কার্যালয়ে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১-এর ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখার সময় এ কথা বলেন। খবর বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছি। এরই মধ্যে আমরা ২০২০ থেকে ২০৪১ সাল নাগাদ দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি।

সরকার গঠনের পর দেশের দ্রুত উন্নয়ন সাধনে তার সরকার বেশকিছু তাত্ক্ষণিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি দেশে প্রথমবারের মতো ২০২০-২০২১ সাল পর্যন্ত আমরা দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরো এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এ প্রেক্ষিত পরিকল্পনাকে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলারএকটি স্বপ্নের দলিল হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১ সাল থেকে শুরু করে আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

সিনিয়র সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামসুল আলম একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন। কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, . তৌফিক--ইলাহী চৌধুরী এবং ড. মসিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার অনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

তিনটি ফায়ার কুশন হস্তান্তর: অগ্নিদুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে ব্যবহারের জন্য জার্মানির তৈরি অত্যাধুনিক তিনটি অগ্নিনিরোধক জাম্বু কুশন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল তার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসেনের হাতে এগুলো তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে ইহসানুল করিম বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানকালে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।

অগ্নিনিরোধক কুশনগুলো ফাইবার গ্লাস দ্বারা তৈরি এবং ১ মিনিটে এগুলো ব্যবহার উপযোগী করা যায়। প্রতিটি কুশনের মূল্য পড়েছে ৫০ লাখ টাকা। প্রতিটির ওজন ৮০ কেজি। এটি ক্রয়ে অর্থায়ন করেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল) কুশনগুলো বিদ্যুৎ অপরিবাহী এবং কম্পন ও শোষণ ছড়িয়ে পড়া ছাড়াই যেকোনো বিপজ্জনক পণ্য পরিবহনে সক্ষম।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস বিভাগের কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। উদ্ধার অভিযানকালে ফায়ার সার্ভিসের কিছু সমস্যার কথাও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।

মো. শহীদুজ্জামান বলেন, ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে মোট ৪১১টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২০৩টি। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আরো ১৫৬টি ফায়ার স্টেশন নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৭টির কার্যক্রম চলছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে জনবল ২০০৮ সালের ৬ হাজার ১৭৫ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ২৯৬ জনে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন