লড়াই গড়াল না আড়াই দিনও!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইডেন টেস্টের প্রথম সেশনেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল পরাজয়। ভারতের ইনিংস শেষে শঙ্কা ছিল দুই দিনে ম্যাচ হারেরও। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস বাংলাদেশ ১৩ রান তুলতে হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। তখনই অনেকে দুই দিনে ম্যাচ হারের এপিটাফ লিখে ফেলেন। তবে মুশফিকুর রহিমের ফিফটিতে কোনো রকমে তৃতীয় দিনে ম্যাচ টেনে নেয় বাংলাদেশ। তখনো বাংলাদেশ পিছিয়ে ৮৯ রানে। এ অবস্থায় যা কিছু করার একাই করতে হতো মুশফিককে। কিন্তু শেষ দিকে সঙ্গীদের নিয়ে মুশফিক লড়তে পারলেন সামান্যই। সব মিলিয়ে তৃতীয় দিন ৪৭ মিনিট টিকে ছিল বাংলাদেশ। আগের দিন হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আর মাঠে নামা হলো না। সর্বনাশ যা হওয়ার তাই হয়েছে। প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয়টিতেও ইনিংস হারের লজ্জা। এবার হারের ব্যবধান ইনিংস ও ৪৬ রানে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট ১০৬ রানে। পরে বিরাট কোহলির ১৩৬ রানে ভর দিয়ে ভারত ৯ উইকেটে ৩৪৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। ২৪১ রানে পিছিয়ে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ থেমে যায় ১৯৫ রানে।

ইডেনে গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্টকে ঘিরে ছিল দারুণ উত্তেজনা। নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির ম্যাচ স্মরণীয় করতে সম্ভাব্য সব উদ্যোগই নিয়েছিলেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। ঘণ্টা বাজিয়ে ম্যাচ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট দলের অধিকাংশ সদস্য। সব মিলিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল গোলাপি বলের এ ম্যাচ। কিন্তু এমন আয়োজনের কোনো মূল্যই দিতে পারল না বাংলাদেশ। বোলাররা কিছুটা সম্ভাবনা জাগালেও ব্যাটসম্যানদের ভরাডুবিতে দেখতে হয়েছে সোয়া দুই দিনে ইনিংস হার। ভারতকে ন্যূনতম চ্যালেঞ্জ দেয়া দূরে থাক, নিজেদের মান বাঁচানোর কাজটিও করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার যখন বাংলাদেশকেঅর্ডিনারি দল বলে সম্বোধন করেন, সেটি মাথা নিচু করেই মেনে নিতে হয়।

ভারত সফরে দুই টেস্টে চার ইনিংস মিলিয়ে একবার মাত্র ২০০ রানের কোটা অতিক্রম করতে পেরেছে মুমিনুল হকের দল। এমনকি দুই টেস্ট মিলিয়েও ম্যাচ পাঁচদিনে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভারত আদায় করে নিয়েছে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা সপ্তম জয়। এ নিয়ে ঘরের মাঠে ভারত জিতল টানা ১২টি সিরিজ। পাশাপাশি প্রথম দল হিসেবে টানা চার ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জেতা একমাত্র দলও এখন ভারত। বাংলাদেশের আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও দুই ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা।

৮.৪ ওভার স্থায়ী তৃতীয় দিনে বাংলাদেশকে প্রথম আঘাতটা দেন উমেশ যাদব। কোনো রান করার আগেই উমেশের বলে কোহলিকে ক্যাচ দেন এবাদত হোসেন। এরপর আল-আমিনকে নিয়ে অল্প সময় লড়াই করেন মুশফিক। সেই উমেশের বলেই সমাপ্তি ঘটে মুশফিকের ৭৪ রানের ইনিংসটির। দুই টেস্ট মিলিয়ে এটিই বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। এমনকি টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দুটি ফিফটির দেখা পেয়েছে। দুটিই মুশফিকের। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রান করেন এ ব্যাটসম্যান। মুশফিকের বিদায়ের পর উমেশ ও ইশান্ত দুজনেই ছিলেন ৪ উইকেটে। ইশান্তের সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচে ১০ উইকেট তুলে নেয়ার। তবে শেষ পর্যন্ত আল-আমিনকে ফিরিয়ে উমেশই ৫ উইকেট পূর্ণ করেন। যদিও ম্যাচের পাশাপাশি সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন ইশান্ত।

এমন হারের পরওশেখার কথা বলছেন অধিনায়ক মুমিনুল। ইডেনেপেয়ার পাওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এ দুটি হারের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভুলগুলো শোধরাতে হবে। অন্যদিকে একের পর এক ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বসিত ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি কৃতিত্ব দিলেন বোলারদের, ‘তারা যেভাবে বল করেছে, পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় উইকেট নিতে সক্ষম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন