ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের আউলাজুর সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এক মাস ধরে রাখা হয়েছে সড়কের নির্মাণসামগ্রী। ১৫ দিন ধরে
মাঠের মধ্যেই চলছে পিচ গলানোর কাজ। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়টির
শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ।
এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা
জানান, উপজেলার মশাখালীমুখী সড়কের পাশে অবস্থিত এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে দুই
শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী। এক মাস আগে বিদ্যালয় থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে
বীরখারুয়া এলাকায় এলজিইডির আওতাধীন সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়। এর পরই সংস্কারকাজে
ব্যবহূত মেশিন, পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী আউলাজুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
মাঠে এনে রাখা হয়। ১৫ দিন ধরে আগুন জ্বালিয়ে মাঠের মধ্যেই গলানো হচ্ছে পিচ। এতে
সৃষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে পুরো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠে
যখন পিচ গলানো হচ্ছে তখন কালো ধোঁয়া সহ্য করেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন
শিক্ষার্থী জানায়, মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখায় খেলাধুলায় তাদের সমস্যা হচ্ছে। অন্যদিকে পিচ
গলানোয় সৃষ্ট ধোঁয়ায় শ্বসকষ্ট হচ্ছে অনেকেরই। এ অবস্থায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে
আসছে না।
এদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা
জানান, অসংখ্যবার নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে বললেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তা আমলে
নিচ্ছেন না। স্কুলের দপ্তরি সুমন মিয়া বলেন,
যেদিন এসব নির্মাণসামগ্রী এনে রাখা হয় সেদিন
স্কুল বন্ধ ছিল। খবর পেয়ে এগুলো রাখতে নিষেধ করলেও কোনো কাজ হয়নি।
সহকারী শিক্ষক আল মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের
মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখার কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। অথচ মাঠের মধ্যে পিচও গলানো
হচ্ছে। বারবার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি কারো কথা
শুনছেন না।
বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক সায়মা
আক্তার বলেন, মাঠে পিচ গলানোয় সৃষ্ট ধোঁয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম
হচ্ছে। ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে অনেকেরই।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক
আব্দুল কাদির বলেন, মাঠে পিচ গলানোর বিষয়ে আমরা বাধা দিলেও আমাদের কথা মানছে না। তাছাড়া
নির্মাণশ্রমিকরা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ দখল করে নিয়েছেন। সেখানে তারা বিভিন্ন
জিনিসপত্র রাখছেন। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে
ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মোবাইল ফোনে
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বাপ্পী মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া
যায়নি। তবে তার ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের একটু অসুবিধা হচ্ছে।
তাই আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী
মাহবুব উর রহমান বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে করণীয় ঠিক করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা
সালমা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।