ভোগ্যপণ্যের বাজারে গত ছয় মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে মসলাজাতীয় পণ্য ধনিয়ার দাম। গত এপ্রিলেও দেশের সর্ববৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পণ্যটি কেজিপ্রতি গড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন মানভেদে ১২০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন রবি মৌসুমে ধনিয়ার বীজ বপনের সময় হওয়ায় এবং বাজারে সংকটের কারণে পণ্যটির দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি ধনিয়া বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১২০ টাকায়। গত অক্টোবরে এ ধনিয়া বিক্রি হয়েছিল ১১৫-১৩০ টাকায়। তবে গত এপ্রিলে মসলাজাতীয় পণ্যটি বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা দরে। এমনকি মার্চেও ধনিয়া বিক্রি হতো ৭০ টাকার উপরে। সে সময় নতুন মৌসুমের ধনিয়া বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমতির দিকে ছিল। তবে এখন নতুন মৌসুমে ধনিয়া বীজ বপনের কারণে সরবরাহ কম থাকায় বাজার ঊর্ধ্বমুখী বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, প্রতি বছর রবি মৌসুমকে সামনে রেখে অক্টোবর-মার্চ পর্যন্ত ধনিয়ার আবাদ ও উৎপাদন হয়। যার কারণে মার্চ-আগস্ট পর্যন্ত পণ্যটির পর্যাপ্ত সরবরাহ ও মজুদ থাকার কারণে বাজারে দাম ৫৫-৬৫ টাকা ওঠানামা করে। তবে রবি মৌসুমে পণ্যটির আবাদকালীন দাম কিছুটা বাড়ে।
বর্তমানে পণ্যটির দাম খুব বেশি অস্থিতিশীল নয় উল্লেখ করে এ ব্যবসায়ী আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও পরিবহন ধর্মঘটের কারণে খাতুনগঞ্জে পণ্যটির কিছুটা সরবরাহ সংকট ছিল। তবে পণ্যটির দাম আবার খুব দ্রুত কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ ব্যবসায়ী।
একই কথা জানান আরেক মসলা ব্যবসায়ী আনোয়ার জাহিদ। তিনি জানান, দেশে এখন শীত মৌসুম। এ মৌসুমে ধনিয়ার চাহিদা কম। এ কারণে দাম একটু বাড়তি। এখন বাজারে মসলা পণ্যের বাইরে ঘরের রান্নায় ধনিয়ার পাতা ব্যবহার হয় বেশি। তাই শুকনা ধনিয়ার চাহিদা কমে যায়। তাছাড়া এখন ধনিয়ার বপন মৌসুম থাকায় বাজারে কিছুটা সংকট আছে। ফলে দাম বাড়তির দিকে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ২৮ হাজার ৪০১ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৫০১ টন ধনিয়া চাষ হয়। দেশের প্রতিটি জেলায় ধনিয়া চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি হয় ফরিদপুর ও কুমিল্লার চান্দিনায়। এর মধ্যে ফরিদপুরের মোকাম থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০-২৫ ট্রাক করে ধনিয়া খাতুনগঞ্জে আসে। প্রতি ট্রাকে ১৫ টন হিসেবে এক সপ্তাহে খাতুনগঞ্জে ধনিয়া আসে প্রায় ৩০০-৩৭৫ টন।