ক্ষুদ্র ঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের কেমন হাতিয়ার!

মো. জোবায়ের হোসেন

ছলিমা বেগম তিন সন্তান নিয়ে ১৬ বছর আগে বিধবা হন। স্বামী হারানোর পর সংসারে নেমে আসে দরিদ্রতার ছোবল। দরিদ্রতা থেকে বাঁচতে তিনি ক্ষুদ্রঋণের আশ্রয় নেন। আয়হীন ছলিমা বেগম এক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধ করতে গ্রহণ করেন অন্য প্রতিষ্ঠানের ঋণ। এভাবে তিনি ঋণের চক্রে পতিত হন। তার ঋণের ভার এখন আবার পরিশোধ করছেন তার সন্তানরাজানিয়েছেন ছলিমা বেগমের সন্তান সরওয়ার। ধরনের অসংখ্য সংবাদ হয়তো পাওয়া যাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ক্ষুদ্রঋণের বিশ্ব স্বীকৃতি মেলে ২০০৬ সালে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) প্রকাশিত সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে এমআরএ নিবন্ধিত এনজিওর সংখ্যা ৭০০ আর তাদের গ্রাহক সংখ্যা তিন কোটি। এত কিছুর পরও দেশে বর্তমান দরিদ্রের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। অবস্থায় ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে একটু গভীর আলোকপাত করা যাক।

ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য বিমোচনের একটি বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা। বাজার অর্থনীতিতে মানুষের প্রতিটি বস্তুগত চাহিদা পণ্য বা সেবার মাধ্যমে মুনাফার আশায় পূরণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে পারটেক্স কোম্পানিমাম ব্র্যান্ডেরবোতলজাত পানি নির্দিষ্ট দামে গ্রাহকদের কাছে বিক্রয় করে। উদাহরণে মানুষের বস্তুগত চাহিদা হলো পানি আর তা পূরণের উপায় হলো বোতলজাত পানি। এর দামের মধ্যেই কোম্পানির মুনাফা নিহিত থাকে। প্রতিষ্ঠানটি যদি মুনাফা না করতে পারত, তাহলে তারা পানির ব্যবসা করত না। কারণ মুনাফাই প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য উদ্দেশ্য।

ক্ষুদ্রঋণও দারিদ্র্য বিমোচনের একটি বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা। আর আলোচ্য বিষয়ে (দরিদ্রতা) মানুষের বস্তুগত চাহিদাটা কী? ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী কারবারিরা মনে করে, মানুষের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থের অভাবে কোনো শিল্প বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিতে পারে না, ফলে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। অভাব দেখা দেয়। অর্থের অভাবের কারণে মানুষ তার প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারে না, ফলে মানুষ দরিদ্রতার মধ্যে পড়ে যায়। তাদের দৃষ্টিতে মানুষের দরিদ্রতার প্রধান কারণ অর্থের অভাব। আর অর্থই হলো আলোচ্য বিষয়ে মানুষের বস্তুগত চাহিদা।

চাহিদা পূরণ করার জন্য পণ্য বা সেবা হলো ঋণ। এখানে মূলত অর্থকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দিয়ে পণ্যের গুণে গুণান্বিত করা হয়েছে। কিছু পুঁজিপতি আর তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান মুনাফার আশায় দরিদ্র মানুষদের ঋণ প্রদান করে। তাদের উদ্দেশ্য মুনাফা বৃদ্ধি। যেটাকে তারা বলে সুদ। সংক্ষেপে ক্ষুদ্রঋণকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে এভাবে, ক্ষুদ্রঋণ হলো দারিদ্র্য বিমোচনের এমন একটি ব্যবস্থা, যা কিছু পুঁজিপতি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির মুনাফার আশায় সুদের বিনিময়ে দরিদ্র মানুষদের ঋণ প্রদানের একটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম। কার্যক্রমের প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন।

অর্থায়নের খরচ

ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম তদারক করে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ঋণ প্রদান করা হয়েছিল প্রায় লাখ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। অর্থের জোগান হয় মূলত গ্রাহকের কাছ থেকে আদায়কৃত সঞ্চয়স্থিতি ঋণস্থিতি হিসাবের মাধ্যমে। ২০১৭ সালে এই দুই হিসাব থেকে যথাক্রমে ২১ হাজার ৬৭১

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন