দুবারের রাষ্ট্রপতি মাহিন্দা রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী

বণিক বার্তা অনলাইন

শ্রীলঙ্কার দুইবারের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা মাহিন্দা রাজাপাকসে এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে গতকাল বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসের নাম ঘোষণা করেন। খবর এএফপি

সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দল লজ্জাজনক পরাজয়ের শিকার হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।

নতুন প্রশাসনের এক মুখপাত্র বিজয়ানন্দ হেরাথ গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, মাহিন্দা রাজাপক্ষে (৭৪) তার ছোট ভাই গোতাবায়ার (৭০) কাছে শপথ গ্রহণ করবেন। শপথ অনুষ্ঠানের পর তার মন্ত্রিসভা নিয়োগ করা হবে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে মাহিন্দা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে গোতাবায়া তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন।

শ্রীলঙ্কার কয়েক দশক ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে রাজাপাকসে পরিবার। গোতাবায়া ও মাহিন্দা ছাড়াও বাসিল ও চামাল নামে তাদের আরো দুই ভাই শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।  মাহিন্দা প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তাদের বড় ভাই চামাল রাজাপক্ষে সংসদের স্পিকার ছিলেন।

প্রবীণ রাজনৈতিক রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে থাকবেন দুই ভাই।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে আমরাই এগিয়ে আছি। তবুও রাজাপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া আদেশকে আমরা সম্মান করি। আমরা তাঁকে নতুন সরকার গঠনের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

৭০ বছর বয়সী বিক্রমাসিংহে বলেছেন, পদত্যাগের বিষয়ে তিনি নতুন প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন। এর ফলে নতুন করে সংখ্যালঘু সরকার গঠনের সুযোগ পাচ্ছে রাজাপাকসের দল ফ্রিডম পার্টি।

বিক্রমাসিংহের মুখপাত্র সুদর্শন গুনাবর্ধনে আগের দিনই বলেছিলেন, জাতির উদ্দেশে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভা এবং জোটের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক করবেন।

বিক্রমাসিংহে দলটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিহত সাবেক প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) প্রধান সাজিথ প্রেমাদাসাকে (৫২) এগিয়ে রেখেছিলেন। তবে দ্বীপপুঞ্জের ২ কোটি ১৬ লাখ জনগণের এক বিভাজনমূলক নির্বাচনে গোতাবায়ার কাছে তিনি একচেটিয়াভাবে হেরে যান।

১৯৭২ সালে তামিল বিদ্রোহীরা পৃথক একটি দেশের জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে। এতে প্রায় চার দশকের গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যাতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গেছে। ২০০৯ সালে সিংহলি সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজাপক্ষে সরকার সর্বাত্মক সামরিক হামলায় তামিল টাইগারদের প্রতিহত করে। এর পর থেকে দেশটিতে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে রাজাপাকসে পরিবার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন