মন্ত্রীর আশ্বাসে মধ্যরাতেই ট্রাক শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

বণিক বার্তা অনলাইন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আশ্বাসে মধ্যরাতেই ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১টার দিকে মন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে শ্রমিক নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মালিক ও শ্রমিকেরা ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে যেসব দাবি যৌক্তিক মনে হবে, সেগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যে লাইসেন্স দিয়ে তারা এখন গাড়ি চালাচ্ছেন, তা আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর মধ্যে তারা যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে কাগজপত্র হালনাগাদ করবেন।

বৈঠকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলামসহ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক–শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন চালকরা যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে চালাচ্ছেন, আগামী সাত মাস তারা সেভাবেই গাড়ি চালাতে পারবেন অর্থাৎ হালকা যান চলাচলের লাইসেন্স নিয়ে যারা ভারী যান চালাচ্ছেন, তারা লাইসেন্স হালনাগাদ করতে আগামী জুন মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে দীর্ঘদিনের একটা অসঙ্গতি ছিল। তাছাড়া আমরাও তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিতে পারছিলাম না। সে জন্য যেভাবে তারা এখন গাড়ি চালাচ্ছেন, সেই লাইসেন্স আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তবে এই সময়ের মধ্যে তারা সঠিক লাইসেন্সটি বিআরটিএ’র মাধ্যমে গ্রহণ করবেন। এই ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি।’

বিভিন্ন প্রকার গাড়ির ফিটনেস, কাগজপত্র হালনাগাদ সময় মতো করতে না পারায় যে জরিমানা হয়েছে, তা মওকুফের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এসব ব্যাপারে যোগাযোগমন্ত্রী মেনে নেবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। গাড়ির দৈর্ঘ্য-প্রস্ত নিয়েও কথা হয়েছে। সেগুলোর ব্যাপারেও ৩০ জুনের মধ্যে বিআরটিএর চেয়াম্যানের সাথে কথা বলে সমাধান করা হবে।’

নতুন আইনের যেসব ধারায় আপত্তি রয়েছে, সে সব বিষয় সুপারিশসহ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে আসাদুজ্জামান কামাল জানান। বাংলাদেশ ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক রুস্তম আলী খান বলেন, “আমাদের সমস্যাগুলো শুনে দাবিগুলো নীতিগতভাবে তারা মেনে নিয়েছেন।”

ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন কাগজপত্র ছাড়া কোনো গাড়ি রাস্তায় চলে না। তবে কিছু গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নাই। সেগুলো বসে আছে। জরিমানার অঙ্ক বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই হালনাগাদ করতে পারেনি। আমরা জরিমানা মওকুফের দাবি করেছি।’

ট্রাক ড্রাইভার ইউনিয়নের সভাপতি মো. মনির জানান, ধর্মঘটের কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না। কিন্তু কোনো আালোচনা না করেই সাধারণ শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকে বসে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন