বিদেশী ছাত্র ভর্তি হ্রাস : শত কোটি ডলার খোয়াচ্ছে মার্কিন অর্থনীতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী শিক্ষার্থী আগমন কমে গেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি বড় অংকের অর্থ খোয়াচ্ছে মার্কিন অর্থনীতি। খবর সিএনএন বিজনেস।

২০১৬ সালের ফল (শরৎ) ভর্তি মৌসুমের পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হ্রাস পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি হাজার ১৮০ কোটি ডলার হারিয়েছে। এছাড়া ৬৫ হাজারের বেশি চাকরি খুইয়েছেন বলে জানায় অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেটরস (নাফসা), যারা পেশাদার শিক্ষকদের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।

নাফসার পাবলিক পলিসি-বিষয়ক পরিচালক রাচেল ব্যাংকস বলেন, বিভিন্ন সূচক এখানে প্রভাব ফেলেছে। তবে প্রকৃত অর্থে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির হারের পেছনে বর্তমান প্রশাসনের নীতি রেটরিক কাজ করেছে।

নাফসা জরিপের উপাত্তে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মনে এই ভাবনা ঢুকে গেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন এবং বিভিন্ন বন্দুক হামলার ঘটনায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে অনিরাপদ বোধ করছেন।

ব্যাংকস বলেন, শুধু মার্কিন প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী রেটরিক এখানে ভূমিকা পালন করেছে তা নয়, বরং দেশজুড়ে অব্যাহত বন্দুক হামলাও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা বিশ্ব গণমাধ্যমে ফলাওভাবে প্রচার হয়েছে। কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কোন দেশে পড়তে পাঠাবেন, বিষয়টি বেশ ভেবেচিন্তে দেখছেন।

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির হার শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এর আগের বছরেও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি দশমিক ৬০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একেবারে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ওপেন ডোরস রিপোর্টে উঠে এসেছে।

অবশ্য নিম্ন ভর্তিহার নিয়ে ভিন্ন কথা বলছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যুরো অব এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষা কর্মসূচির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ক্যারোলাইন ক্যাসাগ্রান্ডে বলেন, মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উচ্চ ফির কারণে বিদেশী শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছতে এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার ব্যয় কমানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এদিকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হ্রাসের ফলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নর্থব্রিজের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী শিক্ষার্থী ভর্তি হ্রাসের ফলে ২৬ শতাংশ আয় কমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, এতে তাদের ৬৫ লাখ ডলার লোকসান হয়েছে।

প্রতি সাতজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা, আবাসন, ডাইনিং, রিটেইল পরিবহন খাতে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় বলে জানায় নাফসা।

যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মার্কিন অর্থনীতিতে তাদের অবদান হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং তারা লাখ ৫৮ হাজার ২৯০ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করেছেন বলে নাফসার এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেটের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা বেশ উচ্চ টিউশন ফি দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়াশিংটন রাজ্যের পেনিনসুলা কলেজে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ১০ হাজার ডলার টিউশন ফি দিতে হয়, অন্যদিকে দেশীয় শিক্ষার্থীদের দিতে হয় হাজার ডলার।

বেশ কয়েকটি কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আগমন কমে যাচ্ছে বলে মনে করেন  পেনিনসুলা কলেজ প্রেসিডেন্ট লিউক রবিন্স। অন্যান্য অগ্রসর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান ঐতিহাসিক সর্বোচ্চে চলে এসেছে। কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে অন্য দেশে যেতে উৎসাহিত হচ্ছেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। তবে রাজনীতি এখানে সবচেয়ে তাত্পর্যপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন পেনিনসুলা কলেজের ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যাক হালস। সাধারণত

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন