ভেজাল-মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ, বাজারজাত ও বিক্রির কারণে যাদের জেল-জরিমানা হয়েছে, তারা যদি দ্বিতীয়বার একই ধরনের অপরাধ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দেখে বিচারপতি একেএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মৌখিকভাবে এ নির্দেশনা দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ভেজাল বা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের জন্য এখন সাতদিন বা এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হলে যাবজ্জীবন এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। ফলে যারা এ কাজে জড়িত থাকবেন, তাদের আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, যেন তারা মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণ বা বিক্রি না করেন।
আদালতে দাখিল করা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই মাসে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। একই সময়ে মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি বন্ধে অধিদপ্তরের প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদ বাশার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসি পরিদর্শন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫৭২টি মামলা করা হয়। এতে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ, নকল ও ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে দুটি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়া একই সময়ে ৩৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।