ব্যবহার বাড়লেও দাম কমছে

কোন পথে কফির বৈশ্বিক বাজার?

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে কফির চাহিদা অব্যাহতভাবে বাড়ছে। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাজারে টানা তিন বছর পানীয় পণ্যটির দাম মন্দার দিকে এগোচ্ছে। এতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষিপণ্যটির উৎপাদকরা। খাতসংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন দাম এভাবে কমতে থাকলে আগামীতে পানীয় পণ্যটি উৎপাদনে অনাগ্রহী হয়ে পড়বেন কৃষক।

এসপ্রেসো বা ল্যাটের দাম বরাবরের মতো চাঙ্গা থাকলেও কফির সর্বাধিক ব্যবহূত প্রজাতি অ্যারাবিকা রোবাস্তার দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে ২০১৭ সাল থেকে পানীয় পণ্যটির দাম ৪০ শতাংশ কমে বর্তমানে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে ঠেকেছে।

চলতি বছরের অক্টোবরে ইন্টারন্যাশনাল কফি অর্গানাইজেশনের (আইসিও) কম্পোজিট সূচকে প্রতি পাউন্ড কফির দাম পড়েছে গড়ে ৯৭ দশমিক ৩৫ সেন্ট, যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় দশমিক শতাংশ কম।

এদিকে পানীয় পণ্যটির চাহিদা রয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। আইসিওর তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে কফির বার্ষিক চাহিদা গড়ে দশমিক শতাংশ বেড়েছে। জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফেয়ারট্রেড অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে দৈনিক গড়ে ২০০ কোটি কাপের বেশি কফি পান করা হয়। এক্ষেত্রে অবশ্য বাড়তি সুবিধা দিয়েছে পণ্যটির সাশ্রয়ী মূল্য। তবে ঠিক এর উল্টোটা ঘটছে পণ্যটির উৎপাদনকারীদের ক্ষেত্রে। কফির অব্যাহত মন্দায় কৃষকরা পণ্যটির আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। 

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ভ্যালেরিয়া রৌদ্রিগেজ বলেন, কফির দামের সংকট উৎপাদনকারীদের জন্য প্রকৃত কাঠামোগত সমস্যা তৈরি করতে শুরু করেছে। এর পরিণাম ভয়ংকর। এতে তারা খাতে বিনিয়োগ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হবে।

এখন প্রশ্ন হলো, চাহিদায় চাঙ্গা ভাবের পরও কফির দাম কেন বাড়ছে না? খাতসংশ্লিষ্টরা বিষয়ে বলছেন, মূলত বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদনকারী দেশ ব্রাজিলে কয়েক বছর ধরে পানীয় পণ্যটির বাম্পার ফলন এর জন্য দায়ী।

পরিস্থিতিতে আইসিও অক্টোবরের মার্কেট রিপোর্টে কফির বৈশ্বিক উৎপাদন কমে আসার পূর্বাভাস করেছে। ২০১৯-২০ মৌসুমে বিশ্বজুড়ে মোট ১৬ কোটি ৭৪ লাখ ব্যাগ (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) কফি উৎপাদনের প্রাক্কলন করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ কম। এর মধ্যে অ্যারাবিকার উৎপাদন দশমিক শতাংশ কমে কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যাগে নামতে পারে সময় রোবাস্তার উৎপাদন দশমিক শতাংশ বেড়ে কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ব্যাগে উন্নীত হতে পারে। তবে এবার পণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় কমলেও এটা হবে ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড।

এদিকে সময় পানীয় পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা আরো দেড় শতাংশ বেড়ে ১৬ কোটি ৭৯ লাখ ব্যাগে উন্নীত হবে। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতিতে চাহিদা অনুপাতে পণ্যটির ব্যবহারে থাকবে শ্লথগতি।

 

সূত্র: দি ইস্ট আফ্রিকান জ্যামাইকা অবজারভার

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন