চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সৌদি আরামকোর দুটি স্থাপনায় ড্রোন হামলা হয়। এতে সৌদি আরবে জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন অর্ধেকে নেমে আসে। স্বভাবতই এ ঘটনার পর দেশটির রফতানি কমার কথা ছিল। যদিও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে রফতানি কমার শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া হয়। তবে জয়েন্ট অর্গানাইজেশন ডাটা ইনিশিয়েটিভের (জেডওডিআই) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে দেশটির গড় রফতানি আগের মাসের তুলনায় ৩ শতাংশ কমেছে, যা ২২ মাসের সর্বনিম্ন। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইস ডটকম।
ওপেকসহ ১১৪টি দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জেডওডিআই। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে দেশটির জ্বালানি তেলের রফতানি ছিল দৈনিক ৬৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল (বিপিডি)। যেখানে তার আগের মাসে অর্থাৎ আগস্টে রফতানি ছিল ৬৮ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। সে হিসাবে এ সময় দৈনিক রফতানি কমেছে ২ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল বা ৩ শতাংশ।
জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের শীর্ষ উত্তোলক ও রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব। দেশটির রাষ্ট্রীয় জ্বালানি তেল উত্তোলক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আরামকোর আবকায়িক ও খুরাইস নামক দুটি স্থাপনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর ড্রোন হামলা হয়। এতে সাময়িকের জন্য দেশটির দৈনিক জ্বালানি তেলের উত্তোলন অর্ধেকের বেশি কমে যায়, যা বৈশ্বিক মোট উত্তোলনের ৫ শতাংশ।
সৌদি আরবসহ ওপেকের অন্য দেশগুলো জেডওডিআইকে প্রতি মাসে তথ্য প্রদান করে। প্রাপ্ত এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ৬ লাখ ৬০ হাজার বিপিডি কমে দাঁড়ায় ৯১ লাখ ২৯ হাজার বিপিডিতে। তবে ওপেকের দ্বিতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, এ সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের জ্বালানি তেল উত্তোলন ১২ লাখ ৮০ হাজার বিপিডি কমে দাঁড়ায় ৮৫ লাখ ৬৪ হাজার বিপিডিতে।
এ হামলার পর যদিও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, উত্তোলন কমে গেলেও ভোক্তা দেশগুলোর সরবরাহ কিছুতেই কমানো বা বাদ দেয়া হবে না। যদিও এ সময় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে যে গ্রেডের জ্বালানি তেল সরবরাহ করার কথা ছিল, তার বিপরীতে অন্য গ্রেডের সরবরাহের প্রস্তাব দেয়া হয়।
এ হামলার পর খুব দ্রুত আবার উত্তোলন সক্ষমতায় ফিরে আসে সৌদি আরব। ওপেকের অফিশিয়াল তথ্য বলছে, অক্টোবরে দেশটি তাদের জ্বালানি তেল উত্তোলন আগের মাসের তুলনায় ব্যারেল ১০ লাখ ৯৪ হাজার ব্যারেল বাড়াতে সক্ষম হয়। সব মিলিয়ে অক্টোবরে দেশটির উত্তোলন ছিল ৯৮ লাখ ৯০ হাজার ব্যারলে।