রংপুরে ২৭টি গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। জীবিকা বলতে হতদরিদ্র এ জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসা দিনমজুরি। ফলে নিত্য অভাবের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এসব মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পথ খুঁজছে ভাগ্যোন্নয়নের। আর এক্ষেত্রে তাদের দিশা দেখাচ্ছে গুচ্ছগ্রামের পুকুরে মাছ চাষ।
রংপুর মত্স্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২৭টি গুচ্ছগ্রামের পুকুর রয়েছে ৩৭টি। মোট ৪৯ দশমিক ৩৬ একর আয়তনের এ পুকুরের সুবিধাভোগী ৪ হাজার ৩৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৩২০ ও নারী ২ হাজার ৫৫ জন। গত বছর এসব পুকুরে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছিল ৭২ টন। যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৯৬ লাখ টাকা। তবে জেলা মত্স্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে চাষ করা গেলে এ উৎপাদন অন্তত ২০০ টনে উন্নীত করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুকুরের মাছ বিক্রির টাকায় কিছুটা হলেও জেলার গুচ্ছগ্রামবাসীর অভাব দূর হচ্ছে। পাশাপাশি এ মাছ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে তাদের আমিষের চাহিদা পূরণেও। তাছাড়া সবাই একসঙ্গে পুকুরের দেখভাল করায় তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ভ্রাতৃত্ববোধ, গড়ে উঠছে সঞ্চয়ী মনোভাব। সর্বোপরি মাছ চাষে তারা সম্ভাবনা দেখছেন ভাগ্য পরিবর্তনের।
গঙ্গাচড়ার ৩ নং বড়বিল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড মিয়াপাড়ায় বড়বিল গুচ্ছগ্রামটি নির্মাণ করা হয় ২০১১ সালে। সাড়ে নয় একর জমির এ গুচ্ছগ্রামে ৬০টি পরিবারে বাস করছে তিন শতাধিক মানুষ। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এসব মানুষ সমিতির মাধ্যমে মাছ চাষ করছে চার একর আয়তনের একটি পুকুরে।
বড়বিল গুচ্ছগ্রাম মাছ চাষ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম রাজা বলেন, গত বছর তারা এ পুকুর থেকে ৮ লাখ টাকার কার্পজাতীয় মাছ বিক্রি করেন। পোনা ও অন্য খরচ ২ লাখ টাকা বাদে তাদের লাভ হয়েছিল প্রায় ৬ লাখ টাকা। পরে লাভের অংশ ভাগ করে দেয়া হয় সমিতির সদস্যদের মাঝে। তিনি বলেন, জেলা মত্স্য অফিসের কর্মকর্তারা মাছ চাষের ব্যাপারে তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া প্রতি বছরে মত্স্য অফিস থেকে তারা কিছু মাছের পোনাও পেয়ে থাকেন।
বড়বিল গুচ্ছগ্রাম মাছ চাষ সমিতির অন্যতম সদস্য মো. বাবর আলী বলেন, এখনো প্রতিদিন আমার দিন শুরু হয় পরিবারের পাঁচ সদস্যের অন্নসংস্থানের দুশ্চিন্তা নিয়ে। মাছ তো দূরের কথা, ডাল-ভাত জোগাড়েও করতে হয় হাড়ভাঙা খাটুনি। তবে গুচ্ছগ্রামের পুকুরে মাছ