আগামী দশকে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা চমৎকার : বিল গেটস

বণিক বার্তা ডেস্ক

আগামী দশকে ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা চমৎকার বলে মনে করেন বিল গেটস। এর মাধ্যমে মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা সম্ভব হবে এবং সরকার স্বাস্থ্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করতে সক্ষম হবে। পিটিআইয়ের সঙ্গে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা মানবহিতৈষী গেটস। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

ভারতের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ভারতের আধার কার্ড ব্যবস্থা, আর্থিক সেবা ওষুধ খাতের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি নিয়ে গেটসের স্তুতি এমন সময়ে এল, যখন বড় আকারের শ্লথগতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। শ্লথগতির ধারা দীর্ঘদিন চলতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।

বিল গেটস বলেন, স্বল্পমেয়াদে কী হচ্ছে, সে বিষয়ে আমার ধারণা নেই। তবে আগামী দশকে কী হবে, সে বিষয়ে বলতে হলে বলব ভারতের দ্রুত প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা চমৎকার। এর মাধ্যমে মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন হবে এবং স্বাস্থ্য শিক্ষার মতো অগ্রাধিকারের ইস্যুগুলোয় গুরুত্ব দিতে পারবে সরকার।

গত শুক্রবার ১১ হাজার কোটি সম্পদ নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্থান পুনরুদ্ধার করলেন গেটস। দুই বছর আগে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের কাছে অবস্থান হারিয়েছিলেন তিনি। মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দাতব্য কাজে হাজার ৫০০ কোটি ডলার দান করেছেন। বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্য বিমোচন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।

ফাউন্ডেশনের কাজ পর্যবেক্ষণে তিনদিনের সফরে বর্তমানে ভারতে অবস্থান করা গেটস বলেন, সবাই ভালো প্রবৃদ্ধির আশা করছে, কারণ ভারতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।

বর্তমান চিত্র অবশ্য ভিন্ন কথাই বলছে। জুনে শেষ হওয়া চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল শতাংশ। ভোক্তা চাহিদা হ্রাস বেসরকারি বিনিয়োগে শ্লথগতির কারণে ছয় বছরের সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় অর্থনীতিটি। প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন মাত্রায় ভারতের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়েছে।

পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আধার পরিচয়পত্র ইউপিআই ব্যবস্থার প্রশংসা করেছেন গেটস। ডিজিটাল পরিচয়পত্র বা আর্থিক সেবার ক্ষেত্রে ভারত থেকে পাওয়া শিক্ষা অন্যান্য দেশে ব্যবহার করতে পারছেন বলে জানান তিনি। এছাড়া রোগের প্রতিষেধক তৈরিতে ভারতের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। মানুষের জীবনমান উন্নয়নে দেশটি প্রভাব বিস্তারকারী অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেন গেটস।

তিনি বলেন, যখন মানুষ ভারত নিয়ে ভাবে, তারা দেশটির আইটি সেবা এবং খাতে বিশাল অর্জনের কথা ভাবে। কম দৃশ্যমান হলেও প্রতিষেধক ম্যানুফ্যাকচারাররা অসাধারণ কাজ করেছেন; হোক সেটা বৃহত্তম ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠান সিরাম কিংবা ভারত বায়োটেক, বায়ো- বা রকম বেশ টি কোম্পানি।

এক দশক ধরে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, পয়োনিষ্কাশন, কৃষি আর্থিক সেবা উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ভারতের বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারারদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উৎপাদিত টিকা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ব্যবহার হচ্ছে বলে জানান ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন