বিকাশমান অর্থনীতি হওয়ার সঙ্গে কী হারালাম?

মামুন রশীদ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, সমাজের কিছু কিছু লোক অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। তিনি এমন একটা শব্দ ব্যবহার করেছেন, যেটা আমরা অনেক আগে স্কুল-কলেজে পড়ার সময় শুনেছি। শব্দটি হচ্ছেফুটানি তিনি কথা বলতে গিয়ে এটাও বলেছেন, ওইসব লোক ভুঁইফোড়, অন্যায় দুর্বৃত্তায়ন, অবিচার, শোষণের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হঠাৎ করে টাকার মালিক বনে গেছে। আমি নিশ্চিত প্রধানমন্ত্রী আরো বড় ব্যাখ্যা দিতে পারতেন। তিনি যথার্থই বলেছেন। তৃণমূল স্তরের বাস্তবতা সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট ধারণাও রাখেন। বিষয়গুলো সামনে আসার মাধ্যমে আমাদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একটা চিত্রও উঠে এসেছে।

সমাজের এই যে নব্য ধনী শ্রেণী; যাদের শিক্ষা, মনন মেধা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে, এসব লোক ধীরে ধীরে সমাজের নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় চলে যাচ্ছে। ব্রিটিশ পাকিস্তান আমলেও এমনটা ছিল। তবে বাংলাদেশ জন্মের পরের দশকগুলোয় আমরা দেখেছি কিছু লোক উদ্যোগী হয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতা নৈকট্যকে ব্যবহার করে বিত্তশালী হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি মফস্বল অঞ্চলেও ভুঁইফোড় শ্রেণীটি রয়েছে। বিগত বছরগুলোয় শ্রেণী হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

ক্যাসিনোবিরোধী আন্দোলনটা যখন শুরু হলো তখন আমার মনে হয়েছে, বিষয়টি কি আগে থেকেই আমরা জানতাম না? আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, বিশেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে, তারা বিভিন্ন সময় ক্যাসিনো নিয়ে ছোট পরিসরে প্রতিবেদনও তৈরি করেছেন। তবে বিষয়টি সম্পর্কে আমি খুব একটা অবগত ছিলাম না।

তাই বলা যায়, সমাজে কী ঘটে চলেছে, আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। মাঝে মাঝে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে আমরা ধারণা করতে পারি যে সমাজের মানুষগুলো কতটা নিচে নেমে গেছে কিংবা সামাজিক অবক্ষয়ের মাত্রাটা কত বেশি। সবকিছু দেখেশুনে হুমায়ুন আজাদেরসবকিছু ভেঙ্গে পড়ে কথা মনে হয়। আমার প্রায়ই মনে হচ্ছে, সবকিছু ভেঙে পড়ছে কিনা?

সবকিছু ভেঙে পড়ার চেয়েও নেতিবাচক যে বিষয়টি মনে হচ্ছে তা হলো, মানুষ একে অন্যকে আর সহ্য করতে পারছে না। ক্যাসিনোবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি আমরা বেশকিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের দুর্নীতি কেলেঙ্কারিরও খবর পেলাম। এটি যদি ১০ শতাংশও সত্য হয়, তবে তা শঙ্কার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ ক্ষমতাপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ধরনের কর্মকাণ্ড করছেন এবং পরবর্তী সময়ে তারাই আবার সুন্দর সুন্দর কথা বলছেন। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, সমাজের নিরীহ সাধারণ মানুষের অগোচরে কি কোনো বড় ঘটনা ঘটে চলেছে? কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি বৃদ্ধি কিংবা ক্যাসিনো বা ইয়াবা ব্যবসা নয়, আমার মনে হয় আরো অনেক কিছু ঘটছে, যা সমাজের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারের মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছে না। কোনো কারণ ছাড়াই একজন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশিত নানা খবরের বরাতে আমরা জানতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিভিন্ন ছুতোয় ভিন্নমত বলে চাপিয়ে দিয়ে অপরাধী বানিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে।

অতীতে যে ধরনের ঘটনা ঘটেনি

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন