বিশেষ সুবিধায় ঋণ

পুনঃতফসিলের মেয়াদ বাড়ল আরো ৯০ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশেষ নীতিমালার আওতায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদনের সময়সীমা আরো ৯০ দিন (তিন মাস) বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে পুনঃতফসিল করা হয়েছে এমন গ্রাহকদের নতুন ঋণ প্রদানের অনুমতিও দেয়া হয়েছে। অন্যান্য খাতের পাশাপাশি বিশেষ সুবিধার আওতাভুক্ত করা হয়েছে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পকেও। বাংলাদেশ ব্যাংকেরব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে গতকাল এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট, ৯ শতাংশ সুদ এবং এক বছরের গ্রস পিরিয়ডসহ ১০ বছরের জন্য খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিটের সুযোগ দিয়ে গত ১৬ মে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময় আবেদনের সময়সীমা বলা হয়েছিল সর্বোচ্চ ৯০ দিন। যদিও এ নিয়ে তৃতীয় দফায় আবেদনের সময়সীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ নীতিমালার আওতায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন করা যাবে।

জারীকৃত নীতিমালায় সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেয়া হয়েছিল ট্রেডিং (গম, খাদ্যদ্রব্য, ভোজ্যতেল ও রিফাইনারি), জাহাজ শিল্প, লোহা ও ইস্পাত শিল্প খাতের ঋণখেলাপিদের। এসব খাতের খেলাপি গ্রাহকরা সরাসরি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল প্রজ্ঞাপনে। অন্য খাতের ঋণখেলাপিদের পুনঃতফসিল সুবিধা পেতে উত্তীর্ণ হতে হবে ব্যাংকের বিশেষ নিরীক্ষায়। যদিও এখন আগের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত খাতগুলোর সঙ্গে বস্ত্র ও পোশাক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে এ দুটি খাতের ঋণখেলাপিরাও বিশেষ নীতিমালার সুবিধা পেতে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন।

আগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, বিশেষ নীতিমালার আওতায় পুনঃতফসিল করা ঋণখেলাপিরা নতুন করে ব্যাংকঋণ নিতে পারবেন না। কিন্তু সে নীতিমালায়ও পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা পরিপালন সাপেক্ষে পুনঃতফসিলকৃত খেলাপিদের নতুন করে ঋণ দেয়া যাবে।

পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিটের বিশেষ নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণখেলাপিরা ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য পুনঃতফসিল সুবিধা পাবেন। কেস-টু-কেস বিবেচনায় ঋণ পরিশোধে করতে এক বছরের জন্য গ্রেস পিরিয়ডও পাওয়া যাবে। অর্থাৎ প্রথম এক বছরে ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করতে হবে না খেলাপিদের। মওকুফ হবে অনারোপিত সুদের সম্পূর্ণ অংশ ও ইন্টারেস্ট সাসপেনসেন্স হিসাবে রক্ষিত সুদও।

ঋণ স্থিতির (মওকুফ অবশিষ্ট) ওপর কস্ট অব ফান্ডের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩ শতাংশ সুদ যুক্ত করা যাবে। তবে ঋণের সুদহার সীমাবদ্ধ রাখতে হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে। স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মন্দ মানের ঋণখেলাপিরা বিশেষ এ সুবিধা পাবেন। পুনঃতফসিলের পর ঋণখেলাপিরা নিতে পারবেন নতুন ঋণও। এসব সুযোগ-সুবিধা পেতে সার্কুলার জারির দিন থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে বলে নির্দেশনা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জারীকৃত সার্কুলার স্থগিত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিশেষ নীতিমালাটি স্থগিত করে আদেশ দেন। যদিও পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন