বঙ্গবন্ধু বিপিএলের লোগো উন্মোচন করা
হয় শনিবার। গতকাল সম্পন্ন হয়েছে প্লেয়ার্স ড্রাফটও। যেখানে খেলোয়াড়দের বেছে নিয়েছে
দলগুলো। তবে ড্রাফটের প্রথম দুই রাউন্ড শেষে দেশী খেলোয়াড়দের মাঝে দলবিহীন থেকে
যান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। পরে অষ্টম খেলোয়াড় হিসেবে তাকে দলে
টানে ঢাকা প্লাটুন। আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে ড্রাফটে রাখা হয়নি সাকিব আল
হাসানকে।
এবার বিপিএল আয়োজন নিয়ে শুরু থেকেই
ছিল জল্পনাকল্পনা। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বিসিবির মতবিরোধ দেখা
দেয়ায় এবারের বিপিএল মাঠে গড়াবে কিনা,
তা নিয়েই ছিল শঙ্কা। একপর্যায়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের
বাদ দিয়ে বিসিবি নিজেই বিপিএল আয়োজনের ঘোষণা দেয়। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবার অনুষ্ঠিত হবে বিপিএলের বিশেষ
আয়োজন। এর পরও অবশ্য বিপিএল আয়োজন নিয়ে শঙ্কার মেঘ যেন কাটছিল না। এমনকি পরিবর্তন
করা হয় তারিখও। তবে শেষ পর্যন্ত সব শঙ্কা দূর করে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বিপিএলের
বিশেষ এ আয়োজন।
গতকাল রাজধানীর র্যাডিসন হোটেলে
ড্রাফটে খেলোয়াড় বেছে নেয়ার সুযোগ পেয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক খুলনা টাইগার্সের প্রথম
পছন্দ ছিলেন ৫০ লাখ মূল্যের
‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরির মুশফিকুর রহিম এবং যমুনা ব্যাংক ঢাকা প্লাটুনের পছন্দের
শীর্ষে ছিলেন তামিম ইকবাল। রাজশাহী রয়্যালস অবশ্য শুরুতে ‘এ
প্লাস’ ক্যাটাগরি থেকে কাউকে পছন্দ করেনি। তারা তাদের দলে শুরুতেই ডেকে নেয় ‘এ’ ক্যাটাগরিতে
থাকা লিটন দাসকে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পছন্দের তালিকায় অবশ্য সবার উপরে
ছিলেন বাংলাদেশ টি২০ অধিনায়ক
‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরির মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সুযোগ পেয়ে রংপুর রেঞ্জার্স দলে টেনে
নেয় পেসার ‘এ’ ক্যাটাগরির মুস্তাফিজুর রহমানকে। সিলেট থান্ডারও শুরুতেই দলে নেয় ‘এ’ ক্যাটাগরির
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে।
দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে সিলেট নিজেদের
পছন্দের খেলোয়াড় হিসেবে বাছাই করে মোহাম্মদ মিঠুনকে। এরপর আল আমিন যান কুমিল্লায়।
ভারতের বিপক্ষে টি২০ সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো মোহাম্মদ নাঈম শেখের
ওপর চোখ ছিল সবার। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে টেনে নেয় রংপুর। ভারতের বিপক্ষে
টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আলো ছড়ানো আফিফ হোসেনের ঠিকানা হয় রাজশাহীতে। টেস্ট
মেজাজের খেলোয়াড় হলেও দল পেতে সমস্যা হয়নি ইমরুল কায়েসের। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে
থাকা ইমরুলকে নেয় চট্টগ্রাম। জাতীয় দল
থেকে দূরে থাকা এনামুল হক বিজয় খেলবেন ঢাকার হয়ে। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফিরে
নৈপুণ্য দেখানো পেসার শফিউল ইসলাম গেছেন খুলনায়। প্রথমদিকে দল না পেলেও পরে ঢাকায়
সুযোগ পান টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
বিদেশী খেলোয়াড়দের মাঝে সবচেয়ে আলো
ছিল ‘এ
প্লাস’ ক্যাটাগরির ক্রিস গেইলের ওপর। এই রাউন্ডে প্রথমেই খেলোয়াড় ডাকার সুযোগ
পায় চট্টগ্রাম। সামনে আসা সুযোগ কাজে লাগিয়ে শুরুতেই এক লাখ ডলার মূল্যের
ক্যারিবীয় কিংবদন্তি গেইলকে দলে টেনে নেয় বন্দর নগরীর দলটি। বিপিএলে বরাবরই দারুণ
পারফর্ম করা রবি বোপারাকে নিয়েছে রাজশাহী। মোহাম্মদ নবিও টি২০ ক্রিকেটের স্বীকৃত
পারফরমার। তাকে দলে নিতে ভুল করেনি রংপুর। তবে বিদেশীদের তালিকা থেকে প্রথম
পর্যায়ে শেরফেইন রাদারফোর্ডকে কেনা সিলেট দ্বিতীয়বার নেয় আফগান ব্যাটসম্যান
শফিকউল্লাহ শাফাককে।
ঢাকার প্রথম পছন্দ ছিল লংকান
অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা। একই দলের দ্বিতীয় পছন্দ লরি ইভান্স। খুলনা প্রথমেই দলে
টেনে নেয় গতবার দারুণ পারফরম্যান্স করা দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা রাইলি রুশোকে।
বিদেশীদের মাঝে তাদের দ্বিতীয় পছন্দ ছিল রবি ফ্রাইলিঙ্ক। কুমিল্লার প্রথম দুই
পছন্দ হলেন লংকান কুশল পেরেরা ও আফগান মুজিব উর রহমান।
বিপিএলের উদ্বোধন ৮ ডিসেম্বর। মাঠের
লড়াই শুরু হবে ১১ ডিসেম্বর।