ভারতে কেবল মুম্বাইয়ের ট্যাপের পানিই শতভাগ নিরাপদ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতের মুম্বাইবাসীদের আর রিভার্স অসমোসিস (আরও) পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র কেনার প্রয়োজন পড়বে না। কারণ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত মুম্বাইয়ের ট্যাপের পানির নমুনা সুপেয় পানির ভারতীয় মানদণ্ড পূরণ করেছে। মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

তবে দিল্লি, কলকাতা চেন্নাইয়ের মতো অন্য মেট্রো শহরগুলোর পানির নমুনা ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের (বিআইএস) পরীক্ষায় পানির মানের ১১টি প্যারামিটারের মধ্যে প্রায় ১০টি পূরণেই ব্যর্থ হয়েছে। ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি সংস্থা বিআইএস।

একইভাবে ভারতের আরো ১৭টি রাজ্যের রাজধানীর পানির নমুনাগুলোতে সুপেয় পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্যইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড (আইএস)-১০৫০০:২০১২’-এর নির্দিষ্ট মানের ঘাটতি দেখা গেছে।

দ্বিতীয় পর্যায়ের সমীক্ষাটি প্রকাশ করে ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান বলেন, ২০টি রাজ্যের রাজধানীর মধ্যে কেবল মুম্বাইয়ের পাইপে সরবরাহকৃত পানির ১০টি নমুনার সবগুলোই ১১টি প্যারামিটারের সবগুলো পূরণ করতে পেরেছে। সেখানে অন্য শহরগুলোর নমুনায় এক বা একাধিক মানদণ্ডের ঘাটতি দেখা গেছে। মন্ত্রী আরো বলেন, মানহীন সুপেয় পানির সমস্যা সমাধানে সারা দেশে পাইপে সরবরাহকৃত পানির ক্ষেত্রে যেন মানদণ্ড অনুসরণ বাধ্যতামূলক করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় থেকে রাজ্য সরকারগুলোর কাছে লিখিত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

পাসওয়ান বলেন, বর্তমানে পাইপে সরবরাহকৃত পানির ক্ষেত্রে মানদণ্ড অনুসরণ বাধ্যতামূলক না থাকায় বিষয়ে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না। একবার বাধ্যতামূলক করা হলে আমরা তখন পদক্ষেপ নিতে পারব।

বিআইএসের সমীক্ষার প্রথম পর্যায়ে দিল্লি থেকে সংগৃহীত ১১টি পানির নমুনার সবগুলোই মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পাইপে সরবরাহকৃত পানি পানের জন্য নিরাপদ নয় বলে দেখা গেছে।

বিআইএস অর্গানোলেপটিক শারীরবৃত্তীয় প্যারামিটার, ভাইরোলজিক্যাল জৈবিক প্যারামিটার এবং ব্যাকটেরিওলজিক্যাল মান পরীক্ষা করেছে। এছাড়া পানিতে উপস্থিত রাসায়নিক বিষাক্ত পদার্থগুলো সম্পর্কে জানতেও পরীক্ষা করা হয়।

সর্বশেষ সমীক্ষা অনুসারে, ভারতের হায়দরাবাদ, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, রাইপুর, অমরাবতী সিমলা শহরের একটি বা একাধিক নমুনা আইএস মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে হায়দরাবাদের পানির নমুনায়ফেনালিক যৌগ ভুবনেশ্বরের পানির নমুনায়ক্লোরামাইনএবং চণ্ডীগড়ের পানির নমুনায়অ্যালুমিনিয়ামকোলিফর্মপাওয়া গেছে।

মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান জানান, দেশের ১৩টি প্রাদেশিক রাজধানীর পানির নমুনাগুলোর একটিও আইএস মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। এসব শহরের মধ্যে রয়েছে চণ্ডীগড়, গুয়াহাটি, বেঙ্গালুরু, গান্ধীনগর, লক্ষে, জম্মু, জয়পুর, দেরাদুন, চেন্নাই, কলকাতা।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, চেন্নাইয়ের ১০টি নমুনার সবগুলোই স্বচ্ছতা, গন্ধ, কাঠিন্য, ক্লোরাইড, ফ্লোরাইড, অ্যামোনিয়া, বোরন কোলিফর্মের মতো নয়টি প্যারামিটারে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া কলকাতার নয়টি নমুনার সবগুলোই ১০টি প্যারামিটারে ব্যর্থ হয়েছে। বিআইএসের মহাপরিচালক প্রমোদ কুমার তিওয়ারি জানান, তৃতীয় পর্যায়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর রাজধানী ১০০টি স্মার্ট শহরের পানির নমুনা পরীক্ষা করা হবে। আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সমীক্ষার ফলাফল জানা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

এছাড়া চতুর্থ পর্যায়ে দেশের সবগুলো জেলা সদর থেকে নমুনা পরীক্ষার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন