সমুদ্র ও বিমানবন্দরে পণ্য খালাসে বেশি সময় নেয় বাংলাদেশ

অবকাঠামো উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে

সাম্প্রতিক সময়ে রফতানি খাতে প্রভূত উন্নতি করা দেশের তালিকায় ভিয়েতনাম নিঃসন্দেহে উপরের সারিতে অবস্থান করছে। কারণে দেশটির রফতানি বাড়ছে দ্রুতগতিতে। দেশটির এগিয়ে যাওয়ার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আমদানি রফতানি পণ্য খালাসে সময় ব্যয় কম হওয়া। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও এগিয়ে ভিয়েতনাম। আগে অবস্থা ছিল না তাদের। সংস্কার কর্মসূচির আওতায় তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনাও এগিয়ে নিয়েছে গত কয়েক বছরে। এতে তাদের রফতানি এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও রফতানি বাণিজ্য থেকে শুরু করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি না পাওয়ার অন্যতম কারণ সময় ব্যয় বেশি হওয়া। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে চলতি বছর কিছুটা অগ্রগতি হলেও এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সম্প্রতি জাপানি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, সমুদ্রপণ্য খালাসে বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিকে সবচেয়ে বেশি সময় নেয়। এক বা দুদিন নয়, দ্বিগুণ সময় লাগে, ১৫ দশমিক দিন। অথচ ভিয়েতনামে লাগে মাত্র সাতদিন। এতে বিদেশী বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। কারণ সময় ব্যয় বেশি হওয়ায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সমুদ্রবন্দরে পণ্য খালাসের সময় একেবারে এক-দুদিনে নামিয়ে এনেছে। দেশগুলো পণ্য খালাস পরিবহনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে তাদের নীতিতে। একই অবস্থা বিমানবন্দরের ক্ষেত্রেও। অন্যান্য দেশ পণ্য পরিবহনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমদানি রফতানি পণ্য খালাসে গতি এনেছে। সবচেয়ে বেশি হলেও রেন্ট সিকিংকে তারা শূন্যে নামিয়ে এনেছে। এর জন্য পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো কঠিন। এনবিআর মাঝে কিছু উদ্যোগ নেয়ায় শুল্কসংক্রান্ত সময় কমে এলেও অন্যান্য সমস্যা রয়ে গেছে।

কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, উন্নতি পুনর্বিন্যাস সাধন করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। শতচেষ্টা সত্ত্বেও দেশে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে বন্দর সুবিধা বৃদ্ধি আশানুরূপ হয়নি। আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বন্দর সুবিধা বেশি বাড়েনি, বরং কমেছে। আমদানি-রফতানি ক্ষেত্রে পণ্য জাহাজীকরণে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সব ধরনের বন্দর সুবিধায় বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ বেশ পিছিয়ে। অথচ দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বন্দর সুবিধা বাড়ানোর বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক বিপ্লব সাধনের জন্য গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ অপরিহার্য। ক্ষুদ্র সিঙ্গাপুর সমুদ্রবন্দর দিয়ে বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের মতো আমদানি-রফতানিতে সুবিধা লাভ করছে। সরকার গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু এক্ষেত্রে গতি খুবই কম। তত্পরতা আমাদের এখনো দৃশ্যমান হয়নি। বাংলাদেশের কার্গো সেবার মান নিম্ন হওয়ায় কয়েক মাস আগে যুক্তরাজ্য বিমানে পণ্য আনা-নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি। বিমানে পণ্য পরিবহনে অধিক সময় ব্যয়ের অন্যতম কারণ ব্যবস্থাপনাগত অদক্ষতা। এটি বাড়িয়ে তুলতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলেও তা যথেষ্ট বলে প্রতীয়মান হয় না।

কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা অব্যাহতভাবে বাড়ার কারণে বন্দরে পণ্য খালাসে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে বেশি। সেখানে জাহাজের জট একটা স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে সমুদ্রবন্দরে। বিশ্বের যেসব দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোয় পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগে, চট্টগ্রাম বন্দর সেগুলোর তালিকার শুরুর দিকে রয়েছে। অবশ্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, সেখানে নানা সংস্কার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। ফলে গত বছরের নভেম্বরে জাহাজজটের নিরসন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন