বাংলাদেশে আর্সেনিকের গবেষণা: অনিশ্চিত যাত্রার ১ যুগ

মাঠ পরিদর্শন থেকে তথ্য সংগ্রহ। তথ্য বিশ্লেষণ থেকে গবেষণাপত্র তৈরি করেই বাংলাদেশের আর্সেনিক পরিস্থিতি নিয়ে উঠে আসে নতুন নতুন তথ্য। সেই তথ্যই ক্লান্তি দূর করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সায়েন্স গবেষণাগারের গবেষক দলের। বাংলাদেশের আর্সেনিক বিষক্রিয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে এক যুগ ধরে গবেষণা চালু রেখেছেন তারা। যদিও এক অনিশ্চয়তার মধ্যে যাত্রা হয়েছিল ২০০৭ সালে। তবে এখন সেই ল্যাব থেকেই প্রকাশ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সেরা গবেষণার একটি।

পিএইচডি শেষ করে সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরা হয়েছে প্রাণরসায়ন অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক . খালেদ হোসেনের। ইচ্ছা বেঁধেছিলেন জাতীয় সমস্যার একটি এবং প্রান্তিক মানুষের সান্নিধ্যে গবেষণা করার। তবে নিজের চেম্বারটা আর এক বুক আশা ছাড়া গবেষণা সরঞ্জাম, রাসায়নিক দ্রব্য কিছুই জোগাড় করতে পারেননি সেই সময়ে।

 

একটি ভুল মেইল, অতঃপর...

পূর্বপরিচিত জাপানি আর্সেনিক গবেষক অধ্যাপক . সাকুরাইকে বাংলাদেশে আর্সেনিকের গবেষণায় সহযোগিতার কথা জানিয়ে -মেইল করেছিলেন . খালেদ। ভুলবশত মেইলটি একই নামের আরেক গবেষকের কাছে চলে গিয়েছিল। . খালেদ জানতেন না মেইল পাঠানোর ছয় মাস আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন গবেষক . সাকুরাই। মেইলের রিপ্লাই না আসায় অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল গবেষণা। গবেষক ধরেই নিয়েছিলেন, হয়তো আর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে কিছুদিন পরই অন্য একটি মেইল থেকে রিপ্লাই এসেছিল অধ্যাপক খালেদের মেইলে। মেইলে বেশ অনুরোধ জানিয়ে বলা হলো, ‘বাংলাদেশে আর্সেনিকের গবেষণার জন্য যে প্রচেষ্টা চলছে, গবেষকরা যেন তা থেকে সরে না যান।অতঃপর নতুন অনুপ্রেরণায় গবেষণা শুরু হয়। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করতে শুরু করেন রিপ্লাই দেয়া সেই গবেষক। জাপানের টকুশিমা বুরনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকুলার নিউট্রিয়েশন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের অধ্যাপক . সেইসিরো হিমেনু।

হিমেনু প্রথম বাংলাদেশে আসেন ২০০৯ সালে। ওই সময়ে একটি লাগেজভর্তি গবেষণা কেমিক্যাল যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। গবেষণায় নতুন মোড় তখন থেকেই।

 

এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সায়েন্স ল্যাব প্রতিষ্ঠা

সেই থেকে যৌথ গবেষণা শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের আর্সেনিক গবেষক অধ্যাপক
খালেদ হোসেন জাপানের আর্সেনিক গবেষক . হিমেনুর।

কাজ শুরু করলেন দেশে আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে। গবেষণা কাজে গতি আনতে বিভাগে গবেষণাগার স্থাপনের জন্য সুপারিশও করেন তিনি। ওই বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণরসায়ন-অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় পরিবেশ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান গবেষণাগার।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সেরা গবেষণা

একটি কম্পিউটার আর পুরনো দুটি রেফ্রিজারেটর। আধুনিক কোনো গবেষণা সরঞ্জাম চোখে পড়বে না। প্রথম দেখাতেই মনে করতে পারবেন না এটি কোনো গবেষণাগার। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চমক সৃষ্টি করেছে সেই গবেষণাগারটি। এই গবেষণাগার থেকেই ‘Dose-dependent relationship between chronic arsenic exposure and cognitive impairment and serum brain derived neurotrophic factor’ শিরোনামের এক গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে, যার ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর প্রায় ৮। প্রকাশ করেছে এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল নামের জার্নাল।

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন