ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষিত

চীনে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো

বণিক বার্তা ডেস্ক

মার্কিন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনের বাইরে অন্য কোনো গন্তব্যমুখী হতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান সত্ত্বেও বড় অংকের বৈদেশিক বিনিয়োগ পেয়েছে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতিটি। ১৪০ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটির ক্রমবর্ধমান ক্রয়সক্ষমতার বিষয়টি অগ্রাহ্য করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে। টেসলা থেকে শুরু করে ওয়ালমার্টের মতো কোম্পানিগুলো চীনে তাদের ব্যবসায় কার্যক্রম সম্প্রসারিত করছে। একই সঙ্গে কোরিয়া, জাপান ইউরোপের অনেক বহুজাতিক কোম্পানিও চীনের বৃহৎ বাজারে দৃষ্টি রাখছে। এতে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে অনেক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি চীন ছেড়ে অন্য বাজারে চলে যাওয়ায় যে ক্ষতি হয়েছিল, তা সামলে উঠতে পারছে বেইজিং। খবর ব্লুমবার্গ।

২০১৯ সালের প্রথম নয় মাসে চীনে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শতাংশ বেড়েছে বলে জানায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যদিও গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের এফডিআই চীনের চেয়ে বেশি ছিল, তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তা নিম্নমুখী রয়েছে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ডেভিড ডলার বলেন, চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারকে লক্ষ্য করে সেখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকার লক্ষণ স্পষ্ট হওয়ায় এছাড়া কিছু করার নেই তাদের। চীনে আসা ৭৫ শতাংশ বৈদেশিক বিনিয়োগই সেবা, ইউটিলিটি দেশীয় বাজারের অন্যান্য খাতে। বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক দূত আরো বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে যদি কোম্পানিগুলো কোনো বিষয়ে উৎসাহিত হয় তা হলো, চীনে তাদের শক্ত ভিত্তি তৈরি করা।

গত আগস্টে ট্রাম্প এক টুইটে বলেছিলেন, মার্কিন কোম্পানিগুলোকে অবিলম্বে চীনের বিকল্প গন্তব্য খোঁজা শুরু করতে হবে। গ্যাবকাল নামে একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের গবেষণাপ্রধান আর্থার ক্রোবার বলেন, আপনি যদি বৃহৎ কোনো মার্কিন কোম্পানিকে জিজ্ঞাসা করেন তারা চীনের বাজার কখন ছাড়ছে, তাহলে তারা হয়তো বলবেসত্যি বলতে কি আমরা আসলে তা করছি না, কারণ সেখানে পুরস্কারটা অনেক বেশি।

চীনের ভোক্তা বাজারের দিকে শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানিগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম কারখানায় ব্যাপক হারে গাড়ি নির্মাণ করতে যাচ্ছে টেসলা। সাংহাইভিত্তিক ওই কারখানায় ৫২ কোটি ১০ লাখ ডলার ঋণ সরবরাহ করেছে চীনা ব্যাংকগুলো। রকম বৃহৎ আকারের বিনিয়োগে পুরো সাপ্লাই চেইনেই কার্যক্রম চাঙ্গা হয়েছে।

চীনে নির্মিত মডেল থ্রি গাড়িতে টেসলার প্রাথমিক সহযোগী হিসেবে থাকছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সেল নির্মাতা এলজি ক্যাম লিমিটেড। গত অক্টোবরে কোম্পানিটি জানায়, তারা চীনে ৪৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরিতে গত জুনে গিলি অটোমোবাইল হোল্ডিংসের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিয়েছে এলজি ক্যাম। কোম্পানিটির মুখপাত্র ইয়ু উন জাই চলতি মাসে এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ব্যাটারি খাতের বিনিয়োগে আমাদের প্রধান মনোযোগ।

দশকের সবচেয়ে শ্লথগতির মধ্য দিয়ে গেলেও বৈদেশিক অর্থপ্রবাহ সার্বিক বিনিয়োগে শ্লথগতি মোকাবেলা করতে এবং কর্মসংস্থান লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়তা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আরো কয়েকটি বৃহৎ বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে।

গত জুলাইয়ে জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) তাদের প্রথম অফশোর বায়ু কারখানা কার্যক্রম শুরু উন্নয়নকেন্দ্র পরিচালনায় বড় অংকের বিনিয়োগ করে, তবে পরিমাণটি অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।

গত জানুয়ারিতে গুয়াংডং প্রদেশের সঙ্গে হাজার কোটি ডলারের ম্যানুফ্যাকচারিং কমপ্লেক্স তৈরিতে কাঠামো চুক্তি স্বাক্ষর করে বিএএসএফ। চীনের প্রথম কোনো বিদেশী রাসায়নিক উৎপাদনকারী হিসেবে প্রকল্পের শতভাগ মালিকানার অনুমতি পায় বিএএসএফ। গত জুলাইয়ে একই রকম এক ঘোষণায় ওয়ালমার্ট জানায়, তারা চীনে পরিবেশক কেন্দ্র স্থাপনে হাজার কোটি ইউয়ান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন