ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সুন্দরবনের পশু-প্রাণির কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আলামত না পাওয়া গেলেও সাড়ে চার হাজার গাছ-পালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বনবিভাগের বেশ কিছু অবকাঠামো-ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে বুলবুলের প্রভাবে সুন্দরবনে ১ কোটি ১৩ লাখ ২১ হাজার ৯শ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তরা এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল মামুন বলেন, সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগে মূলত ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতটি বেশি ছিল। কিন্তু এ আঘাতে সুন্দরবনে মারাত্মক কোন ক্ষতি হয়নি। কোন প্রকার পশু-প্রাণির কোন ধরনের ক্ষয়-ক্ষতির কোন আলামত পাওয়া যায়নি। তবে, পশ্চিম বিভাগে ৪ হাজার ২টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৯শ টাকা। আর অবকাঠামো ক্ষতির পরিমাণ হচ্ছে ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, গাছ-পালার যে ক্ষতি তা সুন্দরবন নিজেই পুষিয়ে নিতে সক্ষম হবে। সে জন্য সুন্দরবনকে সময় দেয়া প্রয়োজন। আমরা সেভাবেই পদক্ষেপগুলো নিতে শুরু করেছি।
সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এরই মধ্যে পর্যটকদের যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে।
বনবিভাগের এই কর্মকর্তা আরো জানান, বুলবুলের আঘাতে সাতক্ষীরা রেঞ্জের পুস্পকাঠি ফরেস্ট স্টেশনের ঘর, কদমতলার এফজি ব্যারাক ও রান্না ঘর, কাঠেশ্বর অফিসের ছোট ট্রলার এবং পাক ঘর, কোবাদক স্টেশনের কাঠের ১০০ ফুট দৈর্ঘের জেটি, ব্যারাক ও রান্নাঘর, চুনকুড়ি স্টেশনের স্যোলার প্যানেল, দোবেকি টহল ফাঁড়ির ৪০ ফুট দীর্ঘ পন্টুন, নলিয়ান রেঞ্জ অফিসে যাতায়াতের রাস্তা ও অফিস ঘিরে থাকা গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বুলবুলের আঘাত পূর্ব সুন্দরবনে তেমন একটা ছিল না। তারপরও যাচাই বাছাই করে পুর্ব সুন্দরবনে ৫৮৭টি গাছ-পালা ক্ষতির আলামত পাওয়া গেছে। বন্য পশু-পাখির কোন ধরনের ক্ষতির আলামত পাওয়া যায়নি। আর পূর্ব বিভাগে বন বিভাগের অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বুলবুলের আঘাতে বনের মধ্যে ৬টি আবাসিক ভবন, ১৭টি অনাবাসিক ভবন, ১০টি জেটি, ৩টি জলযান, ১৯টি অন্যান্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।