অনেক বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে বিদেশী বা আন্তর্জাতিক বন্ড থাকে। মূলত উচ্চ সুদহার বা ইল্ড থেকে সুবিধা গ্রহণ করতে কিংবা পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনতেই এ ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ করেন তারা। মুদ্রামানের ওঠানামার কারণে এ ধরনের বিনিয়োগ থেকে বাড়তি মুনাফা বা লোকসান উভয়েরই সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু শেয়ারের তুলনায় বন্ডে অ্যাবসল্যুট রিটার্নের পরিমাণ কম, সুতরাং মুদ্রার অনিশ্চয়তা বন্ডের রিটার্নের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। এ ধরনের বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত হতে হবে এবং ঝুঁকি প্রশমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
শুধু যে বিদেশী কোম্পানির ইস্যুকৃত বন্ডে মুদ্রাঝুঁকি থাকে এমন নয়। বাংলাদেশী কোনো কোম্পানি যদি ডলার বা ইউরো ডিনমিনেটেডে কোনো বন্ড ইস্যু করে, সেক্ষেত্রেও এ ধরনের ঝুঁকি থাকবে। দেশীয় মুদ্রা ডিনমিনেটেড বন্ডের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝুঁকি থাকে না। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা ডিনমিনেটেডে যেকোনো বন্ডের ক্ষেত্রেই এ ধরনের ঝুঁকি থাকে। সরকার ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রায় সময় বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ডিনমিনেটেড বন্ড ইস্যু করে থাকে। মূলত নিম্ন ঋণ ব্যয়ের সুবিধা গ্রহণ এবং মুদ্রার অন্তঃপ্রবাহ ও বহিঃপ্রবাহের মধ্যে সাম্যাবস্থা বজায় রাখতেই এ ধরনের বন্ড ইস্যু করা হয়। এ বন্ড প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে।
ফরেন-পে বন্ড
যদি কোনো স্থানীয় কোম্পানি বৈদেশিক মুদ্রা ডিনমিনেটেড বন্ড ইস্যু করে, তবে এ ধরনের বন্ডকে ফরেন-পে বন্ড বলা হয়। মার্কিন কোম্পানি আইবিএম যদি যুক্তরাষ্ট্রে কানাডিয়ান ডলার ডিনমিনেটেড কোনো বন্ড ইস্যু করে, তবে তাকে ফরেন-পে বন্ড বলা হবে।
ফরেন বন্ড
যদি কোনো বিদেশী কোম্পানি কোনো একটি দেশে সেই দেশের মুদ্রা ডিনমিনেটেড ইস্যু করে, তবে তাকে ফরেন বা বিদেশী বন্ড বলা হয়। একটি মার্কিন কোম্পানি যদি বাংলাদেশে এসে টাকায় বন্ড ইস্যু করে তাকে ফরেন বন্ড বলা হবে।
ইউরোবন্ড
যদি কোনো কোম্পানি স্থানীয় বাজারের বাইরে বন্ড ইস্যু করে এবং যে দেশে বন্ডটি ইস্যু করা হয়, সে দেশের মুদ্রায় ইস্যু না করে অন্য কোনো মুদ্রায় ইস্যু করে, তবে এ ধরনের বন্ডকে ইউরোবন্ড বলে। কোনো ব্রিটিশ কোম্পানি যদি জাপানে বন্ড ইস্যু করে এবং জাপানি মুদ্রার পরিবর্তে মার্কিন ডলার ডিনমিনেটেড বন্ড ইস্যু করে, তবে এ ধরনের বন্ডকে ইউরোবন্ড বলা হয়। ইউরোবন্ড মানে শুধু সে ধরনের বন্ড নয়, যেগুলো একমাত্র ইউরোপে ইস্যু করা হয়। এটি মূলত একটি জেনেরিক টার্ম, যা একটি নির্দিষ্ট জুরিসডিকশনের বাইরে ইস্যুকৃত যেকোনো বন্ডের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য।
মুদ্রাঝুঁকির উদ্ভব হয় মূলত বন্ডের মুদ্রা ডিনমিনেশন এবং বিনিয়োগকারীর অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে। ইস্যুয়ার দেশী