চট্টগ্রাম বন্দর: ৩০ বছরেও নিয়োগ হয়নি আইটি বিভাগের শূন্য পদে

রাশেদ এইচ চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম বন্দরে গত ৩০ বছরেও সহকারী সিস্টেম অ্যানালিস্টের শূন্যপদে নিয়োগ দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শুধু তা- নয়, আইটি বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ সিস্টেম অ্যানালিস্টের পদ শূন্য হয়ে আছে দেড় বছর ধরে। প্রোগ্রামার পদে নিয়োগ হয়নি ১০ বছরেও। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) অনুমোদিত প্রবিধানমালা অনুসরণ না করে একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে রাখা হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। উপযুক্ত ব্যক্তি নির্বাচন না করায় স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি।

চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য ১৯৮৯ সালে ১৬টি পদ নিয়ে অনুমোদিত হয় কম্পিউটার কেন্দ্র। পরবর্তী সময়ে প্রযুক্তি বিভাগটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি স্বতন্ত্র আইসিটি বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। অথচ আট বছর পার হলেও আইসিটি বিভাগ প্রতিষ্ঠায় কোনো গতি আসেনি। এদিকে বন্দরের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে, নিজস্ব দক্ষ অভিজ্ঞ লোকবল প্রস্তুত করতে না পারায় চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান আইটি কাজ নির্দিষ্ট কিছু স্থানীয় বেসরকারি আইটি ফার্মের ফর্মুলায় ঠিকাদারির ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে।

মূলত এতেই তৈরি হচ্ছে বন্দরের নিজস্ব তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি। এছাড়া নির্ধারিত কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুত স্থানীয় সফটওয়্যার দিয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বিল তৈরির কারণে জাহাজের কার্যক্রম শেষ হওয়ার দেড় থেকে দুই মাস পরও বিল প্রণয়ন হয়। এতে রাজস্ব হারায় বন্দর।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে প্রোগ্রামার পদ ২০১৮ সাল থেকে সিস্টেম অ্যানালিস্ট পদটি খালি হওয়ার পর নতুন করে বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করে নিয়োগের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। সে পথে না গিয়ে সহকারী প্রকৌশলী (রক্ষণাবেক্ষণ) পদ থেকে পদোন্নতি দিয়ে প্রোগ্রামার পদ সিস্টেম অ্যানালিস্ট পদে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয় একজন কর্মকর্তাকে। অথচ নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সহকারী প্রকৌশলী (রক্ষণাবেক্ষণ) পদটি ব্লকড পদ। অর্থাৎ পদ থেকে উপরের দিকে পদোন্নতির কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও প্রোগ্রামার পদে পদোন্নতির জন্য যোগ্যতা হিসেবে সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে কমপক্ষে সাত বছরের চাকরির কথা উল্লেখ থাকলেও মানা হয়নি বিধিটি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, সিস্টেম অ্যানালিস্ট পদ শূন্য থাকার কারণে সেখানে সহকারী প্রকৌশলীকে (রক্ষণাবেক্ষণ) প্রোগ্রামার পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে সিস্টেম অ্যানালিস্ট হিসেবে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে গত মে মাসে সহকারী সিস্টেম অ্যানালিস্ট পদে নিয়োগের একটি উদ্যোগ নেয়া হলেও হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিটের কারণে প্রক্রিয়াটি স্থগিত আছে।

বন্দরের কম্পিউটার কেন্দ্রকে নিজস্ব দক্ষ জনবল দিয়ে শক্তিশালী না করায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বন্দর নিজেই। সম্প্রতি অর্থ হিসাব বিভাগের বিভিন্ন শাখায় বিল পাস, ব্যয় বুকিং বিল আয় শাখায় ভেসেল বিলিং সফটওয়্যারে বিল প্রস্তুতকরণ কাজে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। কয়েক সপ্তাহব্যাপী সমস্যাটি চলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ধরনের সমস্যা থেকে জরুরি ভিত্তিতে সফটওয়্যার সিস্টেমের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম বন্দরের সিস্টেমস অ্যানালিস্টকে চিঠি প্রদান করেছে বন্দরেরই অর্থ হিসাবরক্ষণ বিভাগ। চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দরের কম্পিউটার সেন্টার নিয়ন্ত্রিত সফটওয়্যার সিস্টেমে প্রায় সময়ই সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধানের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী ফোরামের আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন