চলতি বছর ভারতে স্বর্ণের চোরাচালান ১০৫ টন ছাড়াতে পারে

বণিক বার্তা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম দীর্ঘদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী। বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতি বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাবে সেফ হেভেন হিসেবে স্বর্ণে বিনিয়োগ বেড়েছে। এতে মূল্যবান ধাতুটির বাজার চাঙ্গা রয়েছে। ফলে স্বর্ণের দ্বিতীয় শীর্ষ ভোক্তা দেশ ভারতের বাজারে চলতি বছর চাহিদা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। একদিকে স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি, অন্যদিকে দাম বৃদ্ধিতে ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন দেশটির ভোক্তারা। তবে দুটো কারণেই দেশটির বাজারে অবৈধ পথ বা চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণের প্রবেশও বেড়েছে। চলতি বছর ভারতে সব মিলিয়ে চোরাচালানকৃত স্বর্ণের প্রবেশ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১০৫-১১০ টনে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়েছে। খবর কোজেন্সিস।

ডব্লিউজিসির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ভারতে অবৈধ পথে স্বর্ণের প্রবেশ ছিল ৯৫-১০০ টনের মধ্যে, যা চলতি বছর ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। মূলত স্বর্ণের উচ্চমূল্য এবং আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ফলে চোরাচালান স্বর্ণে অধিক লাভ করতে পারছেন সংশ্লিষ্টরা। যে কারণে চলতি বছর চোরাচালান স্বর্ণের প্রবেশ বাড়বে বলে মনে করেন ডব্লিউজিসি।

গত জুলাই থেকে স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক শতাংশ করে ভারত সরকার। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। দাম বাড়তে বাড়তে সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশটিতে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল। সময় প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৩৯ হাজার ৮৮৫ রুপিতে। বর্তমানে মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে প্রতি ১০ গ্রাম স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ হাজার ৪৩৫ রুপিতে। এতে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণ এনে বেশি লাভে বিক্রি করতে পারছেন চোরাকারবারিরা।

অন্যদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ার ফলে ভারতে মূল্যবান ধাতুটির ব্যবহারও কমে এসেছে। বিশেষ করে উৎসবকে কেন্দ্র করে গত মাসে দেশটির ব্যবসায়ীদের মাঝে বিক্রি বাড়ার যে আশা তৈরি হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখতে পারেনি। সময় স্বর্ণ বিক্রি গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যায়। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে স্বর্ণের চাহিদা শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪৯৬ টনে। অন্যদিকে গত বছর ভারতে স্বর্ণের চাহিদা ছিল ৭৬০ টন। চলতি বছর সব মিলিয়ে চাহিদা দাঁড়াতে পারে ৭০০-৭৫০ টনের মতো। যেখানে এর আগের প্রাক্কলনে চাহিদা ধরা হয়েছিল ৭৫০-৮৫০ টন।

ডব্লিউজিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোমাসুন্দরাম পিআর মনে করেন, ভারতের বাজারে চাহিদা কমে গেলেও অবৈধভাবে স্বর্ণের প্রবেশ এখন অনেক বেশি। আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করায় চোরাকারবারিরা এখন অধিক লাভ করতে পারছেন। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় স্বর্ণের চোরাচালান খুব বেশি বাড়বে বলে মনে করেন না তিনি।

তবে চলতি বছর স্বর্ণের চাহিদা কমে গেলেও আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে চাহিদা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে বলে মনে করে ডব্লিউজিসি। সোমাসুন্দরাম বলেন, স্বর্ণের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আসবে। এছাড়া সরকারও বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে ২০২০ সালে স্বর্ণের চাহিদা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন