চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ‘প্রথম পর্যায়’ স্বাক্ষরের দ্বার প্রান্তে পৌঁছার কথা জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের পরিচালক ল্যারি কুডল। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কাউন্সিলের এক অনুষ্ঠানে বেইজিংয়ের সঙ্গে বেশ গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দুই দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তির সই নিয়ে টেলিফোনে সফল আলোচনার কথা জানালেও সম্ভাব্য চুক্তির দিনক্ষণ বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি এ কর্মকর্তা। খবর রয়টার্স, এএফপি।
হোয়াইট হাউজের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, ধীরে ধীরে আমরা প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তির দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছি। আমাদের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, যে রকম আলোচনা এর আগে হয়নি।
প্রসঙ্গত, পাল্টাপাল্টি চীন-মার্কিন শুল্কারোপ এক বছর অতিক্রম করছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির শীর্ষ দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধ এরই মধ্যে ঝুঁকিতে ফেলেছে আর্থিক বাজারগুলোকে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা। বাণিজ্যযুদ্ধের জেরে এরই মধ্যে চলতি বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এছাড়া উভয় দেশের ঘোষিত শুল্কারোপ সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হলে আগামী বছর নাগাদ বৈশ্বিক অর্থনীতি ৭০ হাজার কোটি ডলার হ্রাস পাবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে সংস্থাটি।
এদিকে দীর্ঘ বাণিজ্যযুদ্ধে হাঁপিয়ে ওঠা বৈশ্বিক বাজারগুলো সংশ্লিষ্ট দুই দেশের চুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কারণ চলমান পরিস্থিতির সৃষ্ট অনিশ্চয়তায় বৈশ্বিক ব্যবসায়িক বিনিয়োগ শ্লথ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে চলতি বছরের মে মাসে ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির একটি ক্ষীণ সম্ভাবনা তৈরি হলেও তা বেশি দূর এগোয়নি। বরং প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তির খসড়া থেকে চীন অনেক দূরে সরে গেছে, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদের এমন অভিযোগে অকাল মৃত্যু হয় সৃষ্ট সব সম্ভাবনার। তবে কুডলের নতুন ইতিবাচক ইঙ্গিতে আর্থিকবাজারের বিরাজমান পরিস্থিতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দুই দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা অনেকটা অগ্রসর হওয়ার পর সবকিছু বানচাল করে দেয়ার মতো মন্তব্য করে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিং চুক্তিতে ব্যর্থ হলে কিছু চীনা পণ্যে উল্লেখযোগ্য হারে নতুন শুল্কারোপ করা হতে পারে বলে গত বুধবার মন্তব্য করেন তিনি।
টালমাটাল এ অচলাবস্থায় কুডলের বক্তব্যে আশার আলো