[পূর্ব প্রকাশের পর]
গণিত ভাবনা পর্ব ১৩: সে আর লালন একখানে রয়, তবু লক্ষ যোজন ফাঁক রে
বাংলা গানের অমূল্য সম্পদ লালন ফকিরের গান। ফরিদা পারভীনের অসামান্য গায়কির সুবাদে লালনের গান বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পরিচিত। আজ যে বাংলাদেশে লোকগীতি এবং বাউল সংগীতের এত জনপ্রিয়তা ও মর্যাদা, তা ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনগীতির কারণেই।
সেই অসামান্য লালনের অসামান্য গান ‘বাড়ির কাছে আরশি নগর’। লালনের অন্য গানগুলো না জানলেও এ গানটা মোটামুটি সবাই জানে। ফরিদা পারভীনসহ আরো অনেক শিল্পী এ গান গেয়ে রেকর্ড করেছেন। এদের মধ্যে হালের ব্যান্ডের শিল্পীরাও আছেন। আমি নিজে গান না গাইতে পারলেও একটা কবিতায় লালনের আরশি নগরের ‘সে আর লালন একখানে রয়, তবু লক্ষ যোজন ফাঁক রে’ পঙিক্তটা ব্যবহার করেছিলাম। সেই পঙিক্ততেই এ পর্বের শিরোনাম।
লালনের এ গানের অর্থ আমি সোজাসুজিভাবে এই বুঝি যে আরশি নগরের পড়শি লালনের একই সঙ্গে খুব কাছের আবার খুব দূরের। ‘খুব কাছের আবার খুব দূরের’—এ ধারণার সাহায্যে গণিতের কয়েকটা বিষয় ব্যাখ্যার প্রচেষ্টায় এবারের পর্ব।
শুরুতে আমাদের সংখ্যার বিষয়ে কিছু প্রাথমিক ধারণা লাগবে। আমি পর্ব দুইতে আলোচনা করেছি যে মানুষের মস্তিষ্কের কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে ১, ২, ৩, ৪ ইত্যাদি করে গণনার শুরু হয়েছে। এ সংখ্যাগুলোকে বলা হয় প্রাকৃতিক সংখ্যা বা ন্যাচারাল নাম্বার। কিন্তু সংখ্যার ধারণা শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রাকৃতিক সংখ্যাকে পরিবর্ধন করে আমরা পাই পূর্ণ সংখ্যা বা ইন্টিজার। এগুলো হলো ...,-৪-৩, -২, -১, ০, ১, ২, ৩, ৪,... ইত্যাদি সংখ্যা। প্রাচীন যুগে মানুষ ভগ্নাংশ নিয়েও ভেবেছিল, কারণ ভাগ করাও মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। ভগ্নাংশকে গাণিতিক পরিভাষায় বলা হয় মূলদ সংখ্যা বা র্যাশনাল নাম্বার। এ সংখ্যাগুলো হলো সেইসব সংখ্যা, যাদের দুটি পূর্ণসংখ্যার ভাগ হিসেবে দেখানো যেতে পারে। তবে শূন্য দিয়ে ভাগ করা যাবে না। ২ সংখ্যাটি একটি মূলদ সংখ্যা, কারণ আমরা লিখতে পারি ৪/২=২। একইভাবে ০.৫ও একটি মূলদ সংখ্যা, কারণ