মুশফিক–মিরাজের প্রতিরোধ

বণিকবার্তা অনলাইন

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম দিন টস জিতে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে টাইগার বাহিনী। জবাবে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের ৬ উইকেটে ৪৯৩ রানেই ইনিংস ঘোষণা দেন ভারত। ইনিংস ব্যবধান এড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে  মাঠে নামলেও দাঁড়াতে পারেনি টাইগার বাহিনী। দ্বিতীয় ইনিংস শুরুতেই ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সকালের সেশনে ৪ উইকেটে ৬০ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে গিয়েছিল সফরকারি দল।

বিরতির পর পঞ্চম ওভারে মাঠ থেকে বিদায় নিলেন মাহমুদউল্লাহ। সকালের সেশনে ৪ উইকেট যাও পর ২৮ রানের জুটি গড়তে পেরেছেন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ। শামির বলে স্লিপে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ (১৫)। মাঠে আসে লিটন দাস। তিনিও বেশি সময় টিকতে পারেনি। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে শিকার হন রবিচন্দ্র অশ্বিনের। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন এ ব্যাটসম্যান। তবে এমন পরিস্থিতিতে একাই লড়াই করছিলেন মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গী হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজ। লিটন আউট হওয়ার পর মাঠে নামে মিরাজ। মুশফিকুর রহিম ১১৪ বল খেলে ৫৩ রান নিয়ে অপরাজিত রয়েছেন। অপর দিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৪ বল খেলে ৩৮ রান নিয়ে উইকেটে রয়েছেন। সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন দুজন। চা বিরতির আগে ৬ উইকেটে ১৯১ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

মাহমুদউল্লাহর পর ফিরলেন লিটন: বিরতির পর পঞ্চম ওভারে মাঠ থেকে বিদায় নিলেন মাহমুদউল্লাহ। সকালের সেশনে ৪ উইকেট যাও পর ২৮ রানের জুটি গড়তে পেরেছেন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ। শামির বলে স্লিপে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। মাঠে আসে লিটন দাস। তিনিও বেশি সময় টিকতে পারেনি। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে শিকার হন রবিচন্দ্র অশ্বিনের। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন এ ব্যাটসম্যান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৬৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য।

মিঠুন-মুমিনুলের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ: দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিয়ে নেমেই চাপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। ১৯ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় বাংলাদেশ। উইকেটে আসেন মুমিনুল হক ও মোহাম্মদ মিঠুন। দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে মাঠে নেমে আরো বিপদে ঠেলে দিয়ে দুই জনই সাজঘরে ফিরলেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১৭ ওভার খেলে ৪ উইকেটে ৫০ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

রিভিউ নিয়ে জিতল ভারত, মোহাম্মদ শামি উইকেটের দেখা পেলেন প্রথম ওভারেই। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকে শামির বলটি। মুমিনুল খেলেছিলেন শাফল করে। চেষ্টা করেছিলেন ফ্লিকের মতো করতে। ব্যাটে-বলে হয়নি। বল লাগে প্যাডে, লেগ স্টাম্প তখন দেখা যাচ্ছিল স্পষ্ট। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার রড টাকার। ভারত নেয় রিভিউ। দেখা যায়, বল লাগছিল লেগ স্টাম্পে। ৭ রানে ফিরলেন মুমিনুল। মাঝে এক ওভার পরই শামিকে অযথাই পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিঠুন (১৮)। ২০ বলে ১৪ রান করে মাঠ ছাড়লেনতিনি। এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছে ম্যাচ চতুর্থ দিনে টেনে নেওয়া দূরের কথা ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য।

শুরুতেই দুই উইকেট নেই বাংলাদেশের: তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগেই ইনিংস ঘোষণা দেন ভারত। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। শুরুতেই দুই ইউকেট নেই বাংলাদেশের। ১৯ রানের মধ্যে বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠালেন ভারত।

নতুন বলে ভারতের তিন পেসার ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ শামিকে সামলাতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস। কিন্তু ষষ্ট ওভারেই ইমরুলকে (৬) বোল্ড করে ফেরার পথ দেখিয়ে দেন উমেশ। পরের ওভারে আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামকেও বোল্ড আউট করেন ইশান্ত। উইকেটে রয়েছেন মুমিনুল হক ও মোহাম্মদ মিঠুন। ম্যাচ বাঁচাতে উইকেটে পড়ে থাকার বিকল্প নেই ব্যাটসম্যানদের সামনে। খেলা চতুর্থ দিনে টেনে নেওয়াই এখন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২ উইকেটে ২৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ।

৪৯৩ রানেই ইনিংস ঘোষণা ভারতের, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ: আগের দিনের রান নিয়েই তৃতীয় দিনের শুরুতে ইনিংস ঘোষণা দেন ভারত। তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছে বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম দিনের খেলা শুরু করেছেন।

সাধারণত, তৃতীয় দিনে টেস্টের গতিপথ অনেকটা বোঝা যায়। কিন্তু এই টেস্টের ভাগ্য অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেছে প্রথম দুই দিনেই। তৃতীয় দিনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ম্যাচ কি চতুর্থ দিনে নিতে পারবে বাংলাদেশ?

সুনীল গাভাস্কার বললেন, উইকেট এখনও ব্যাটিং সহায়ক। তবে সবচেয়ে জরুরী, এখানে লড়াই করে টিকে থাকার মানসিক শক্তি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আছে কিনা। যদি সেখানে তারা উন্নতি করতে না পারে, ম্যাচ শেষ হতে পারে আজ বিকেলেই।”

৩৪৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করল ভারত: দ্বিতীয় দিনে ভারতের ব্যাটসম্যানরা একরকম উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের বোলিং। দুই দিনেই তাই প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে ম্যাচের ভাগ্য। ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান নিয়ে ২য় দিন শেষ করেছে ভারত। তাদের লিড হয়ে গেছে ৩৪৩। ৯০ ওভার পুরো হয়নি দ্বিতীয় দিনে। কিন্তু দিনে ৮৮ ওভার খেলেই ভারত তুলেছে ৪০৭ রান! আগের দিন ৩২ রানে জীবন পাওয়া মায়াঙ্ক আগারওয়াল করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রান। অজিঙ্কা রাহানে ফিরেছেন ৮৬ রানে। ফিফটি করেছেন চেতেশ্বর পুজারা ও রবীন্দ্র জাদেজাও।


তবে দিনের শুরুটা বাংলাদেশ লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল। পুজারাকে ফিফটির পর বিদায় করেন আবু জায়েদ। শূন্য রানে বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠান। তবে সেই লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারেনি টাইগার বাহিনী। খেলা দেখে মনে হয়েছিল সারাদিনই রান উৎসবে মেতে ছিল কোহলি বাহিনী। এতো কিছুর মধ্যেও বাংলাদেশের আশার আলোর ছিল আবু জায়েদ,একাই তুলে নিয়েছেন চার উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ১১৪ ওভারে ৪৯৩/৬ (আগের দিন ৮৬/১) (মায়াঙ্ক ২৪৩, রোহিত ৬, পুজারা ৫৪, কোহলি ০, রাহানে ৮৬, জাদেজা ৬০*, ঋদ্ধিমান ১২, উমেশ ২৫*; ইবাদত ৩১-৫-১১৫-১, আবু জায়েদ ২৫-৩-১০৮-৪, তাইজুল ২৮-৪-১২০-০, মিরাজ ২৭-০-১২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৪-০)।

আগারওয়ালের সেঞ্চুরিতে বড় লক্ষ্যে এগোচ্ছে ভারত:ইন্দোর টেস্টে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনের খেলা চলছে। ৮৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৩০৩ রান ভারতের। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সঙ্গে ক্রিজে আছেন আজিঙ্কা রাহানে। ৩২ ও ৮২ রানে পাওয়া জীবন কাজে লাগিয়ে সেঞ্চুরি করেছেন মায়াঙ্কা আগারওয়াল। ভারতীয় ওপেনার দ্বিতীয় দিন লাঞ্চের কিছুক্ষণ পর দেখা পান তৃতীয় শতকের।

২৫১ বলে ২১ চার ও ৩ ছয়ে নিয়ে ১৬৫ রান করে অপরাজিত রয়েছেন আগারওয়াল। মধ্যাহৃভোজনের পর দ্বিতীয় সেশনের পঞ্চম ওভারে সেঞ্চুরি তুলে নেন আগারওয়াল। ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারে এটি তাঁর তৃতীয় সেঞ্চুরি। আজিঙ্কা রাহানের প্রায় সেঞ্চুরি হতে চলল। তাদের দেড়শো ছাড়ানো জুটিতে বড় লিড নেওয়ার পথে ভারত। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।ভারতের যে ৩টি উইকেট পড়েছে সবগুলোই আবু জায়েদের। কাল রোহিত শর্মাকে তুলে নেন এ পেসার।

আগারওয়াল-রাহানের প্রতিরোধে লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে ভারত: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন পার করলেও চ্যালেঞ্জই নিতে পারেনি টাইগাররা। স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে খেলতে মেনে সব উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে টাইগার বাহিনী। জবাবে প্রথম দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান। বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৬৪ রান পেছনে। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের চেষ্টা লড়াইয়ে ফেরার।

দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাসের এক জোড়া উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন ডানহাতি পেসার আবু জায়েদ। তবে তারপর আর ভারতকে চাপিয়ে রাখতে পারেননি বোলাররা। যার ফলে জুটি গড়ে ভারতকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে গেছেন মায়াঙ্ক আগারওয়ালও অজিঙ্কা রাহানে।

দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৮৮ রান। এরই মধ্যে প্রথম ইনিংসে ৩৮ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা আগারওয়াল অপরাজিত ৯১ রানে। শুরু থেকেই নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিং করা রাহানে অপরাজিত রয়েছেন ৩৫ রানে। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেটই নিয়েছেন আবু জায়েদ চৌধুরি। আগের দিন রোহিত শর্মার উইকেট নেওয়া পেসার এ দিন ফিরিয়েছেন ফিফটি করা চেতেশ্বর পুজারাকে, শূন্য রানে বিদায় করেছেন বিরাট কোহলিকে।
 
শূন্য রানে কোহলিকে সাজঘরে পাঠালেন আবু জায়েদ: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন পার করলেও চ্যালেঞ্জই নিতে পারেনি টাইগাররা। স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে খেলতে মেনে সব উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান সংগ্রহ করে টাইগার বাহিনী। জবাবে প্রথম দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ১ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান। বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৬৪ রান পেছনে। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের চেষ্টা লড়াইয়ে ফেরার। দিনের শুরুতেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। আবু জায়েদের বলেই সাজঘরে ফিলতে হল চেতেশ্বর পুজারাকে।

আবু জায়েদের ডেলিভারিটিও ছিল যথেষ্ট ভালো। ফুল লেংথ বলে ব্যাটসম্যানকে প্রলুব্ধ করেছিলেন ড্রাইভ খেলতে। পুজারা শরীর থেকে একটু দূরে ড্রাইভ করেছিলেন। বল একটু সুইং করে বেরিয়ে তার ব্যাটের কানায় লেগে উড়ে যায় চতুর্থ স্লিপ বা ওয়াইড স্লিপে। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন সাইফ হাসান। তবে আবু জায়েদের আগের ওভারে পুজারার ক্যাচ নিতে গিয়েই আঙুলে আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বদলি হিসেবে ফিল্ডিং করছিলেন সাইফ। আবু জায়েদ শুধু পুজারাকে বিদায় করেননি ভারতের
অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে শূন্য রানে মাঠ ছাড়াতে বাধ্য করছে।

লেংথ বল অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকে দারুণ তীক্ষ্ণভাবে। কোহলি হয়তো ভাবতে পারেননি এতটা ঢুকবে বল। তার ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে বল গিয়ে লাগে পেছনের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। উইকেটের পেছন থেকে কিপার লিটন দাস বলছিলেন, তিনি ঠিকমতো বুঝতে পারছিলেন না ইম্প্যাক্ট কোথায়। অধিনায়ক মুমিনুল হক তারপরও নেন রিভিউ। দেখা গেল, ইম্প্যাক্ট লাইনেই ছিল, বল লাগছিল লেগ স্টাম্পে। উল্লাসে ভাসল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৩৫ ওভার সংগ্রাম করে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ ১৩৪ রান। উইকেটে রয়েছেন অজিঙ্কা রাহানে ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল।

ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর ক্যাচ মিসে দিন শেষ করল বাংলাদেশ:উত্তেজনাপূর্ণ টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটে করতে শুরু করলেও ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ক্যাচ মিসে দিন শেষ করল টাইগার বাহিনী। তৃতীয় সেশনের শুরুতেই সব ইউকেট হারিয়ে ১৫০ রানে সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ১ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে ভারত। ফলে  ৬৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করবে বিরাট কোহলির দল।

ব্যাটিংয়ে নেমে খুব ধীরেসুস্থে শুরু করে ভারত। বাংলাদেশের দুই পেসার এবাদত হোসেন আর আবু জায়েদ রাহীকে বেশ সম্মান দিয়েই খেলেছেন ভারতীয় দুই ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল আর রোহিত শর্মা। প্রথম ৭ ওভারে রান উঠে মাত্র ১৪টি। অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক আউটসুইংগারে রোহিত শর্মাকে (৬) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান রাহী। এরপর চেতেশ্বর পূজারা আর আগারওয়াল বেশ দেখেশুনে খেলেছেন।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমীহ আদায় করা এই পেসার ২৪তম ওভারে ফের বল হাতে নিয়েই সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে আগারওয়ালের ক্যাচ হাতে নিয়েও ফেলে দেন ইমরুল কায়েস। দিনশেষে ওই ক্যাচ মিসের আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।  ৩২ রানে জীবন পাওয়া আগারওয়াল অপরাজিত আছেন ৩৭ রানে। সাথে চেতেশ্বর পূজারা ব্যাটিংয়ে ৪৩ রান নিয়ে।

আবু জায়েদ রাহী ৮ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে নিয়েছেন ১টি উইকেট। ১১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ইবাদত হোসেন। মার খেয়েছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম, ৭ ওভারে দিয়েছেন ৩৩ রান।

দেড়শ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ: দিনের শুরুতেই ভারতীয় পেসারদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়ে সফরকারীরা। দলীয় ৩২ রানে হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটসম্যান।

এরপর কিছুটা আশা দেখান মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহীম। কিন্তু লাঞ্চের পর ভেঙে পড়ে তাদের প্রতিরোধও। তৃতীয় সেশনের শুরুতেই সব ইউকেট হারিয়ে ১৫০ রানে সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। শেষ জুটির পতন ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার। সেই সময়টিও এসেছে দ্রুতই। ইবাদত হোসেনকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ করে দিয়েছেন উমেশ যাদব। তৃতীয় উইকেটে মুশফিক ও মুমিনুলের ৬৮ রানের জুটি ছাড়া ছিল না আর কোনো ফিফটি জুটি। ১০ রানের মধ্যে পড়েছে শেষ ৫ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৫৮.৩ ওভারে ১৫০ (সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ৩৭, মিঠুন ১৩, মুশফিক ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১০, লিটন ২১, মিরাজ ০, তাইজুল ১, আবু জায়েদ , ইবাদত ; ইশান্ত ১২-৬-২০-২, উমেশ ১৪.৩-৩-৪৭-২, শামি ১৩-৫-২৭-৩, অশ্বিন ১৬-১-৪৩-২, জাদেজা ৩-০-১০-০)।

মাহমুদউল্লাহর আউটে বিপদ বাড়লো বাংলাদেশের: মাঠে নেমে আজিঙ্কা রাহানের ক্যাচ মিসে জীবন পান মাহমুদউল্লাহ। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। পরের ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বোল্ড হয়ে সাজ ঘরে ফিরতে হল তাকে। মাহমুদউল্লাহ ৩০ বলে একটি চারে ১০ রান করেন।
মুমিনুলের বিদায়ে বিপদে বাংলাদেশ:  লাঞ্চের পর শেষ রক্ষা হলেও না মুমিনুলের। অশ্বিনের বলে বোল্ড আউট হয়ে বাংলাদেশকে বিপদের মুখে রেখে ৩৭ রানে মাঠ থেকে বিদায় দিলেন এই অধিনায়ক। এরপর উইকেটে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ। তার ব্যাট থেকে আসা সিঙ্গেলে দলের রান স্পর্শ করেছে তিন অঙ্ক। মাত্রই উইকেটে আসা মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে উইকেটে আছেন ৩৪ রান নিয়ে মুশফিক।

প্রথম সেশনে মুমিনুল-মুশফিকের প্রতিরোধ: শুরুতেই  দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলামকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর ১২ রান করে মাঠ ছাড়েন মোহাম্মদ মিঠুন। সব মিলিয়ে প্রথম সেশনে মুমিনুল-মুশফিকের প্রতিরোধে ২৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৩ রান  করেছে বাংলাদেশ। দলের অধিনায়ক ৫৬ বলে চারটি চারে ২২ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ৩ রানে বিরাট কোহলির হাতে জীবন পান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। উমেশ যাদবের বলে তার ক্যাচ থার্ড স্লিপে ধরতে পারেননি ভারতের অধিনায়ক।

ফের জীবন পেলেন মুশফিক:  সব মিলিয়ে প্রথম সেশনে মুমিনুল-মুশফিকের প্রতিরোধে ২৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৬৩ রান করে বাংলাদেশ। দলের অধিনায়ক ৫৬ বলে চারটি চারে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার সঙ্গে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ৩ রানে বিরাট কোহলির হাত ফসকে বেঁচে যান বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে তিনি দ্বিতীয়বার জীবন পান সহ-অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানের কাছে। লাঞ্চের পর দ্বিতীয় ওভারে তার উঁচু শটটি স্লিপে দাঁড়ানো রাহানে ধরতে পারেননি, তখনও মুশফিকের রান ছিল ১৪।

শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ: বাংলাদেশ দলের হয়ে ওপেনার হিসেবে ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম মাঠে নামে। প্রথম ওভারে স্ট্রাইক নিয়েছেন সাদমান। ভারতের বোলিং আক্রমণ শুরু করে ইশান্ত শর্মা। বাংলাদেশ ইনিংসের প্রথম তিন ওভারই ছিল মেডেন। চতুর্থ ওভারে একটি করে সিঙ্গেল নিয়ে রানের দেখা পান দুই ওপেনারই। পঞ্চম ওভারে ইশান্তের বলে সাদমানের ব্যাট থেকে এসেছে ম্যাচের প্রথম চার।

শুরুটা ভাল হলেও বেশি সময় মাঠে টিকতে পারেনি দুই ওপেনার। ইমরুল ফিরলেন অল্পতেই, তার সঙ্গী হয়ে কিছু সময় পর বিদায় দিলেন সাদমান ইসলামও। দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ।  বাঁহাতি ওপেনার বিদায় নিলেন আলগা শট খেলে। রাউন্ড দা উইকেটে বল করে ইশান্ত শর্মা চেষ্টা করছিলেন সাদমানকে সামনে টেনে এনে শট খেলতে প্রলুব্ধ করতে। সেই চেষ্টাতেই কাজ হলো। বল ছিল ড্রাইভিং লেংথ থেকে একটু পেছনে। জায়গায় দাঁড়িয়ে শরীর থেকে দূরে ড্রাইভ করতে চাইলেন সাদমান। ব্যাটের কানায় লেগে বল গেল কিপারের গ্লাভসে। ২৪ বলে ৬ রান করে আউট হলেন সাদমান। বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

জীবন পেলেন মুশফিক:
হাত ফসকে গেলো বিরাট কোহলির। মুঠোবন্দি ক্যাচ ফেলে দিলেন। জীবন ফিরে পেলেন মুশফিকুর রহিম! নিজের চতুর্থ ওভারে বল হাতে আসেন উমেশ যাদব। তার প্রথম বলটিই মুশফিকের ব্যাটে লেগে স্লিপে থাকা ভারত অধিনায়কের হাতে বন্দি হয়। কিন্তু সেটি মুঠোবন্দি করে রাখতে পারেননি তিনি। ফসকে যান। পড়ে যায় হাত থেকে। হতবাক বিরাট তখন জিভ কেটে আফসোস করেন। নতুন জীবন পান মুশফিক।

মুমিনুলের অভিষেক: এদিকে, সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পর নতুন অধিনায়ক হয়েছেন মুমিনুল হক। কোহলির দলের বিপক্ষে সাফল্য পেতে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি তরুণদের নিয়ে সাফল্য পেতে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দলপতি। টেস্টে দু’দল এর আগে ৯ বারের মোকাবেলায় ৭টি ম্যাচেই জয় পেয়েছে ভারত। অন্য দুইটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।

বাংলাদেশ একাদশ:
মুমিনুল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস,তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ,এবাদত হোসেন ও আবু জায়েদ, ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম।

ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি ও উমেশ যাদব।
ভারতের সঙ্গে টেস্ট দ্বৈরথে বাংলাদেশ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন