সাগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা

৩০ বছর পর জানা গেল পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়ে ১৯৮৯ সালে খুন হন সাগিরা মোর্শেদ ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের হওয়া মামলাটির তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়ে জানায়, ছিনতাইকারীর গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছিল কিন্তু বাদীপক্ষের নারাজির ভিত্তিতে শুরু হয় অধিকতর তদন্ত এরপর ৩০ বছরে পরিবর্তন হন ২৬ জন তদন্ত কর্মকর্তা অবশেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে উঠে আসে সাগিরা মোর্শেদ ছিনতাইকারীর গুলিতে নন, পারিবারিক দ্বন্দ্বে ভাড়াটে খুনি দিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল

সাগিরা মোর্শেদ সালাম (৩৪) ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর রাজারবাগের বাসা থেকে তার মেয়ে সারাহাত সালমাকে আনতে বেইলি রোডের ভিকারুননেসা স্কুলের সামনে যান সেখানে পৌঁছানো মাত্রই তাকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন ঘটনায় সাগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস ছালাম চৌধুরী রমনা থানায় একটি মামলা করেন

মামলাটি তদন্ত করে পরের বছর আদালতে অভিযোগপত্র দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক এবিএম সুলতান আহম্মেদ এক বছরের তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়ে ওই তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ছিনতাইকারীরা সাগিরা মোর্শেদের পথরোধ করে তার হাতে থাকা স্বর্ণের বালা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সময় তিনি স্বর্ণের বালা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছিনতাইকারী মন্টু তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়

গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত মন্টুর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচারকার্য শুরু হয় বিচারকার্য চলাকালে ছয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয়া হয় সাক্ষীদের জবানবন্দিতে আসামি মারুফ রেজার নাম আসায় আদালতের এপিপি মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন আদালত অধিকতর তদন্তের আবেদন মঞ্জুর করেন সে সময় আদালতের এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মারুফ রেজা উচ্চ আদালতে ক্রিমিনাল রিভিশন দায়ের করেন এরপর ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মোট ২৬ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি নিয়ে তদন্ত চালান

সবশেষে পিবিআইয়ের তদন্তে সাগিরা মোর্শেদ হত্যার পেছনে পরিবারের সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সাগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস ছালাম চৌধুরী তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তার বড় ভাই সামছুল আলম চৌধুরী মেজ ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী

সাগিরা মোর্শেদের সঙ্গে আব্দুস ছালাম চৌধুরীর বিয়ে হয় ১৯৭৯ সালের ২৫ অক্টোবর পরের বছর শিক্ষকতা করার জন্য সপরিবারে ইরাকে চলে যান আব্দুস ছালাম ইরাক-ইরান যুদ্ধের কারণে ১৯৮৪ সালে সপরিবারে দেশে ফিরে রাজারবাগ পেট্রল পাম্পের পাশে পৈতৃক ভিটায় গড়ে তোলা দোতলা বাড়িতে বসবাস শুরু করেন

অন্যদিকে তার মেজ ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী বারডেম হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি ১৯৮০ সালে সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিনকে বিয়ে করেন ওই বছরেই স্ত্রীকে নিয়ে লিবিয়ায় চলে যান ডা. হাসান আলী চৌধুরী ১৯৮৫ সালে স্ত্রী দুই সন্তানসহ দেশে ফিরে আসেন তিনি দেশে এসে রাজারবাগে বাবার বাসায় তার মা, বড় ভাই সামসুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে নিচতলায় একসঙ্গে কিছুদিন বসবাস করেন

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন