পোশাক খাতে নিরীক্ষা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে মার্কিন ক্রেতাদের চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উত্তর আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতা ও শ্রম অধিকার সংস্থার জোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি (সংক্ষেপে অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত) গত বছর ডিসেম্বরে কারখানা নিরীক্ষা বা মূল্যায়ন কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করে। একই সময়ে নিরাপন নামের নতুন একটি সংস্থার ঘোষণা আসে, যার পৃষ্ঠপোষক ওয়ালমার্টসহ ২৩টি ক্রেতা ব্র্যান্ড। মূলত অ্যালায়েন্সের বিদায়ের পর নিরাপনের মাধ্যমেই নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোগী হয় ব্র্যান্ডগুলো।

সম্প্রতি নিরাপনের কর্মসূচি আদালতের স্থগিতাদেশ পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে নিরীক্ষা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চাপ প্রয়োগ করছে মার্কিন ব্র্যান্ড ক্রেতাদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে একটি চিঠিও দিয়েছে এএএফএ প্রেসিডেন্ট ও সিইও রিক হেলফেনবেইন। ৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া চিঠিটির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সভাপতি, বাণিজ্যমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশী হাইকমিশনারকে।

চিঠির শুরুতে এএএফএ সভাপতি রিক হেলফেনবেইন বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগকে সহায়তা দিতে পোশাক, পাদুকা ও ভ্রমণপণ্য শিল্পের জাতীয় সংগঠন এএএফএর পক্ষে আমি লিখছি। সংগঠনটি ৪০০ বিলিয়ন ডলারেরও বড় মার্কিন খুচরা বাজারের প্রতিনিধিত্ব করে। ব্র্যান্ডগুলোর জন্য শ্রমিক সুরক্ষা নিশ্চয়তা প্রদানকারী নিরাপনের ওপর স্থগিতাদেশের বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

শ্রমিক নিরাপত্তা অগ্রগতি টেকসই করতে ব্র্যান্ডগুলোই ছয় বছরের জন্য নিরাপন শুরু করে এমন তথ্য উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, এএএফএ সমর্থিত অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটির সফলতার পর ছয় শতাধিক কারখানায় নিজস্ব তদারকিতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের চর্চা অব্যাহত রাখতে ২৩ ব্র্যান্ডের জোটবদ্ধ উদ্যোগ হলো নিরাপন। স্থাপত্য, বৈদ্যুতিক ও অগ্নিনিরাপত্তার পাশাপাশি অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা বিষয়ক শ্রমিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও নিরাপনের তদারকির অন্তর্ভুক্ত।

সরকার ও অন্য খাতসংশ্লিষ্টদের শ্রমিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত কাজের সঙ্গে নিরাপনের কর্মসূচি সাংঘর্ষিক নয় এমন তথ্য উল্লেখ করে এএএফএ প্রেসিডেন্ট এবং সিইও বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর পরিপূরক হিসেবে ভূমিকা রাখবে নিরাপন।

শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্যোগ থামানো যায় না এমন মন্তব্য করে এএএফএ। নিরাপনের কাজ বন্ধ হলে লাখো শ্রমিকের নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে এমন মত প্রকাশ করে চিঠির শেষে এএএফএ প্রেসিডেন্ট এবং সিইও বলেছেন, এটি বন্ধ হওয়া আজ, আগামীকাল ও ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শ্রম নিরাপত্তা টেকসই থাকবেব্র্যান্ডগুলোর এমন আস্থার ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়। এ প্রেক্ষাপটে আমরা আপনার এবং খাতসংশ্লিষ্টদের প্রতি নিরাপন ও বাংলাদেশের শ্রমিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে সমর্থনের জোরালো সুপারিশ জানাচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন