ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্টের প্রকৃত
সংখ্যা কত? এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে প্লাটফর্মে ভুয়া অ্যাকাউন্টের দৌরাত্ম্য বন্ধে
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি। এরই অংশ হিসেবে চলতি
বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে মোট ৩২০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট
বন্ধের তথ্য জানিয়েছে ফেসবুক,
যা গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ
পর্যন্ত ছয় মাসে বন্ধ করা মোট ৩০০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্টের চেয়ে কিছুটা বেশি। খবর
এপি।
গত বুধবার এক বিবৃতিতে ফেসবুক
জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ভুয়া অ্যাকাউন্ট
বন্ধের পাশাপাশি শিশু নগ্নতা এবং যৌন হয়রানিমূলক ১ কোটি ৮৫ লাখ পোস্ট প্লাটফর্ম
থেকে মুছে দেয়া হয়। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসে এ
ধরনের পোস্ট মুছে দেয়া হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লাখ। ফেসবুক তাদের প্লাটফর্মে ভুয়া
অ্যাকাউন্ট শনাক্ত এবং অসদাচরণসংশ্লিষ্ট পোস্ট শনাক্তের প্রক্রিয়া উন্নত করেছে। যে
কারণে ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ ও নেতিবাচক পোস্ট মুছে দেয়ার পরিমাণ বেড়েছে।
ফেসবুকের দাবি, সোস্যাল
নেটওয়ার্ক প্লাটফর্মটিতে ভুয়া অ্যাকাউন্ট হিসেবে শনাক্ত করার আগে সবগুলো
অ্যাকাউন্টকে সক্রিয় হওয়ার একটি সুযোগ দেয়া হয়। যে কারণে অনেক নতুন ভুয়া
অ্যাকাউন্ট ফেসবুকের ষাণ্মাসিক প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হয় না। এখনো ফেসবুকের ২৪৫
কোটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে প্রায় ৫ শতাংশ ভুয়া।
এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে
ঘৃণাত্মক বক্তব্য ছড়ায় এমন ১ কোটি ১৪ লাখ পোস্ট প্লাটফর্ম থেকে মুছে দিয়েছে
ফেসবুক। এর আগের ছয় মাসে ৭৫ লাখ এ ধরনের পোস্ট মুছে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকের দাবি, প্লাটফর্মে
ঘৃণাত্মক বক্তব্য ছড়ায় এমন পোস্ট মুছে দেয়ার ক্ষেত্রে তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এরই অংশ হিসেবে প্লাটফর্মে চরমপন্থাসংশ্লিষ্ট কনটেন্ট, শিশু
নগ্নতা ও যৌন হয়রানিমূলক পোস্টের পাশাপাশি অন্যান্য নেতিবাচক পোস্টের ক্ষেত্রে কঠোর
নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময় ফেসবুক সন্ত্রাসবাদী
প্রচারণার তথ্য শেয়ার বাড়িয়েছে। এর আগের প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি শুধু আল কায়দা, আইএসআইএস
এবং এ সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্ট শাখার তথ্য শেয়ার করেছিল। এবারের প্রতিবেদনে আইএসআইএস
বা আল কায়েদা ছাড়াও ক্ষুদ্র সন্ত্রাসবাদী গ্রুপগুলোর কার্যক্রম শনাক্ত ও তথ্য
শেয়ার করেছে।
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক
জাকারবার্গ বলেন, ‘সংখ্যা বেশি হওয়া মানে এমন নয় যে এসব ভুয়া অ্যাকাউন্ট বা পোস্ট সব
ক্ষতিকর। এটা হলো আমাদের ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও কনটেন্ট শনাক্ত করার কঠোর চেষ্টার
সাফল্য। ভবিষ্যতে আরো বেশি ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি
বছরের শুরুতে ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরির হার সবচেয়ে বেশি ছিল। ওই সময়
উল্লেখযোগ্য ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করে ফেসবুক। শুধু এপ্রিল থেকে জুনেই ১৫০ কোটি
ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি হওয়ার তথ্য দিয়েছে ফেসবুক। এছাড়া গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে
ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরির হার আরো একধাপ বেড়েছে।
ফেসবুক ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রিত
ছবি শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইনস্টাগ্রামেও ভুয়া পোস্টের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। এবারই প্রথম
ইনস্টাগ্রামকে ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ
জানিয়েছে, গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ইনস্টাগ্রাম থেকে ৩০ লাখ
কনটেন্ট সরানো হয়েছে।